গাইবান্ধায় জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে সংঘর্ষে আহত রুহুল আমিন (৪৩) নামের এক সাবেক সেনা সদস্যের মৃত্যু হয়েছে। একই ঘটনায় আহত হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন আরও দুই ভাই। মারামারির ঘটনায় হওয়া মামলায় প্রতিপক্ষের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বুধবার (২৯ জানুয়ারি) বিকেল পৌনে ৫টার দিকে নিহতের পরিবার সূত্রে সেনা সদস্যের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।

এর আগে, গতকাল রাতেই রংপুর সিএমএইচে ওই সেনা সদস্যের চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় ওই সেনা সদস্যের। তিনি বর্তমানে এলপিআরএ রয়েছেন।

নিহত সেনা সদস্য রুহুল আমিন এবং আহত জাকির (৪৬) ও রতন (৪০) জেলার ফুলছড়ি উপজেলার কাতলামারি এলাকার মুক্তিযোদ্ধা আনসার আলীর ছেলে।

স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মুক্তিযোদ্ধা আনসার আলীর পরিবারের সঙ্গে অনেকদিন থেকেই ওই এলাকার মধু ব্যাপারির জমি-সংক্রান্ত বিরোধ চলছিল। যা নিয়ে এখনও আদালতে মামলা বিচারাধীন। এরমধ্যে গতকাল মঙ্গলবার সকালের দিকে মধু ব্যাপারি ও তার ছেলেরা জমিতে সেচ দেওয়ার জন্য পুকুরে ডিজেলচালিত শ্যালো মেশিন বসান। এতে মুক্তিযোদ্ধা আনসার আলীর ছেলে জাকির হোসেন, সেনাসদস্য রুহুল আমিন ও রতন মিয়া বাঁধা দিলে প্রথমে উভয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মধু বেপারির পক্ষের প্রায় ১০ থেকে ১৫ জন দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আনসার আলীর তিন ছেলেকে পিটিয়ে গুরতর আহত করেন।

পরে স্বজন ও স্থানীয় লোকজন আহতদের উদ্ধার করে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে নেন। সেখানে অবস্থা গুরতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তিনজনকেই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে পাঠানো হয়। পরে সেনা সদস্য রুহুল আমিনকে নেওয়া হয় রংপুর সিএমএইচে। সেখানে গতকাল রাতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।

অন্যদিকে, ওই মারামারির ঘটনার পর রাতে মুক্তিযোদ্ধা আনসার আলী বাদী হয়ে ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ১০ জনকে আসামি করে ফুলছড়ি থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত প্রতিপক্ষের পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

নিহত সেনা সদস্যের ছোট ভাই আহত রতনের স্ত্রী মুক্তি খাতুন মোবাইল ফোনে বলেন, নিহত সেনা সদস্য আমার স্বামীর আপন বড় ভাই। তিনি গতকাল রাতেই রংপুরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। বেশ কিছু কারণে মৃত্যুর খবরটি আমাদের তাৎক্ষণিক জানানো হয়নি। তার মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আনা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমার স্বামী রতন এবং তার আরেক বড় ভাই জাকির দুজনই গুরতর আহত অবস্থায় রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসাধীন আছেন।

ফুলছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা খন্দকার মো. আজিজুর রহমান মোবাইলে বলেন, গতকাল মারামারির ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা আনসার আলী বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেছেন। ওই মামলায় পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ সময় এক প্রশ্নের জবাবে ওসি বলেন, সেনা সদস্যের মৃত্যুর খবর আমরা এখনো পাইনি।

রিপন আকন্দ/এএমকে