নওগাঁর বদলগাছিতে গোপনে এক গৃহবধূর (২৮) গোসলের ছবি তুলে ব্ল্যাকমেইলে করে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্তের নাম জয় (২৪)। ওই গৃহবধূ সম্পর্কে তার চাচি। 

এ ঘটনায় জয়ের বিরুদ্ধে ২৪ মে থানায় অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী গৃহবধূ। অভিযোগের চারদিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। 

জানা গেছে, ২০১৩ সালে ওই গৃহবধূর বিয়ে হয়। তাদের সংসারে ৭ বছরের এক মেয়ে সন্তান আছে। এক বছর আগে উপজেলার মিঠাপুর ইউনিয়নের ভেরেন্ডি সানাপাড়া গ্রামের মামুনুর রশিদের ছেলে জয় গোপনে মোবাইল ফোনে গৃহবধূর ছবি তোলেন। পরে ছবি থেকে ভিডিও করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে তাকে কুপ্রস্তাব দেন। বিষয়টি ওই নারী তার স্বামীকে জানালে তিনি জয়ের পরিবারকে বলেন। এতে জয় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রতিবেশী শিউলি খাতুনের (৩৬) মাধ্যমে স্থানীয়দের মোবাইলে ছবি ছড়িয়ে দেন। এরপর গৃহবধূকে তার স্বামী তালাক দেন।

তালাকের পর গৃহবধূ বিচারের জন্য থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, জয় গোপনে গোসলের ছবি তুলে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে বিভিন্নভাবে কুপ্রস্তাব দিত। বাধ্য হয়ে কুপ্রস্তাবে সাড়া দিতে হয়েছে। ৩/৪ দিন সে শারীরিক সুবিধা নিয়েছে। গত এক বছর আগে জয় বিয়ে করে। তারপরও সে আমার সঙ্গে সম্পর্ক চালিয়ে যেতে বলে। এতে রাজি না হওয়ায় ছবি থেকে ভিডিও করে ছড়িয়ে দেয়। পরে স্বামী আমাকে তালাক দিয়ে দেয়। আমি স্বামীর সঙ্গে সংসার করতে চাই। জয়ের শাস্তির দাবি করেন তিনি। 

গৃহবধূর স্বামী আনোয়ার হোসেন রানা বলেন, জয় আমার আপন চাচাতো ভাইয়ের ছেলে (ভাতিজা)। সমস্যা শুরু হলে স্ত্রী তাকে জানায়। জয়ের বাবা-মাকে জানানো হলে কিছুদিন ভালো ছিল। এরই মধ্যে ভিডিও প্রকাশ হওয়ায় আদালতের মাধ্যমে গত বৃহস্পতিবার স্ত্রীকে তালাক দিয়েছি। 

অভিযুক্ত প্রতিবেশী শিউলি খাতুন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কয়েকদিন আগে আমার বাড়িতে পিকনিক করে খাবারের আয়োজন করা হয়েছিল। এ সময় মোবাইলের মেমোরি কার্ড দিয়ে ছেলেরা টিভিতে গান দেখছিল। এমন সময় ওই ভিডিওটি দেখে তারা চিৎকার দিয়ে ওঠে। পরে টিভি বন্ধ করে দেওয়া হয়। মেমোরি কার্ড ও সোহাগকে ধরে নিয়ে গৃহবধূর স্বামীর কাছে নেওয়া হয়। তবে ভিডিওটি আমি ছড়াইনি।

এ ব্যাপারে অভিযুক্ত জয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার মুঠোফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বদলগাছি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুল ইসলাম বলেন, গত ২৪ মে গৃহবধূ লিখিত অভিযোগ করেছেন। একটি ভিডিও ক্লিপ সংগ্রহ করা হয়েছে। ভিডিওটি অস্পষ্ট হওয়ায় ভিডিওর সঙ্গে গৃহবধূ বা অভিযুক্তের তেমন মিল খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।

তিনি আরও বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অভিযুক্ত জয়কে এলাকায় পাওয়া যাচ্ছে না।

শামীনূর রহমান/এইচকে