বিয়ের গেট, প্যান্ডেল থেকে শুরু করে কয়েকশ মানুষের ভূরিভোজের আয়োজন। দেখে বোঝার উপায় নেই এটা কোনো হতদরিদ্র পরিবারের মেয়ের বিয়ে। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দায়িত্ব নিয়ে পরিষদের মঞ্চেই এমন আয়োজন করে বিয়ে দিয়েছেন হতদরিদ্র অসহায় এক পরিবারের মেয়ের। 

মা হারা অসহায় মেয়ের বিয়ের বর্ণাঢ্য আয়োজন করে প্রশংসায় ভাসছেন যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা তাঁতী লীগের সভাপতি আবু তাহের আবুল সরদার। জনপ্রতিনিধি হিসেবে ইউনিয়নের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের পাশাপাশি ব্যক্তি উদ্যোগে বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কাজ করে মানুষের মন জয় করে চলেছেন তিনি। 

জানা গেছে, চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত তহবিল থেকে এ বিয়ের আয়োজন করা হয়। বিয়ের পর নতুন দম্পতির সংসার কীভাবে চলছে সে বিষয়েও খোঁজ রাখবেন তিনি।  

শুক্রবার (২৮ মে) দুপুরে নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে এ বিয়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। বর যশোর সদর উপজেলার চাঁচড়া ইউনিয়নের বেরবাড়িয়া গ্রামের ফজর উদ্দিনের ছেলে আরিফুল হোসেন (২২)। তিনি পেশায় অটোভ্যানচালক। আর কনে নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের নারিকেলবাড়িয়া গ্রামের মনিরুল মোল্যার মেয়ে তানজিলা খাতুন (২০)। 

ব্যতিক্রমী এ বিয়েতে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ভিক্টোরিয়া পারভীন সাথীসহ উপজেলা আওয়ামী লীগের বিভিন্ন স্তরের নেতৃবৃন্দ।

এ বিষয়ে নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবু তাহের আবুল সরদার বলেন, তানজিলার মা মারা যাওয়ার পর তার বাবা আরেকটি বিয়ে করে অন্যত্র চলে যান। তানজিলাকে রেখে যান বৃদ্ধা নানির কাছে। সেখানেই সে বড় হয়। চতুর্থ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর আর পড়াশোনা হয়নি। আড়াই বছর আগে একবার বিয়েও হয়েছিল তানজিলার। কিন্তু মাত্র চারদিন সংসার করার পর ঘর ভাঙে তার। এরপর আগের মতো নানির সঙ্গে মানুষের বাসায় কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতে থাকে। সম্প্রতি তার বিয়ে ঠিক করে আমাকে জানালে ইউনিয়ন পরিষদে বিয়ে দেওয়ার আয়োজন করি। সামাজিক দায়বদ্ধতা থেকে অসহায় পরিবারের মেয়ের বিয়ের আয়োজন করতে পেরে ভালো লাগছে। তারা যেন সুখে-শান্তিতে বসবাস করতে পারে সেই দোয়া করি।

বাঘারপাড়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ভিক্টোরিয়া পারভীন সাথী জানান, নারিকেলবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে ইউপি চেয়ারম্যান আবু তাহের আবুল সরদার নিজ উদ্যোগে অসহায় দরিদ্র পরিবারে বেড়ে ওঠা তানজিলার ধুমধাম করে বিয়ে দিয়েছেন। মধ্যবিত্ত পরিবারে যেভাবে নানা রকমের খাবার ও গান-বাজনা করে বিয়ে দেওয়া হয় চেয়ারম্যান সেভাবেই বিয়ে দিয়েছেন। ওদের পারিবারিক জীবনে কোনো অসুবিধা হলে উপজেলা পরিষদও সহযোগিতা করবে। 

জাহিদ হাসান/আরএআর