গাইড বাঁধের আধা কিলোমিটার নদীগর্ভে বিলীন

রংপুরের গঙ্গাচড়ায় তিস্তা নদীবেষ্টিত কোলকোন্দ ইউনিয়নে হঠাৎ পানি বেড়ে বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে। পানির তোড়ে ইউনিয়নের বিনবিনাচরে সদ্য নির্মিত স্বেচ্ছাশ্রমের বাঁধটি এখন ভাঙন ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। গাইড বাঁধের প্রায় আধা কিলোমিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। বাঁধটি ভেঙে যাওয়ায় বিনবিনাচর এলাকায় আবাদি জমি ও নদীতীরবর্তী ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট হুমকিতে রয়েছে। 

স্থানীয়রা গাছ ও বাঁশ দিয়ে ভাঙন ঠেকানোর চেষ্টা করছে। সম্প্রতি স্থানীয়দের সহযোগিতা ও ইউপি চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত উদ্যোগে প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বিনবিনাচর এলাকায় স্বেচ্ছাশ্রমে গাইড বাঁধটি নির্মাণ করা হয়।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাব ও উজান থেকে নেমে আসা পানির কারণে তিস্তা নদীতে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। ডালিয়া পয়েন্ট ছাড়াও তিস্তার গঙ্গাচড়া ও কাউনিয়া পয়েন্টেও পানি বেড়ে বিপৎসীমার খুব কাছাকাছি দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  

বিনবিনাচর এলাকার ইউপি সদস্য নুরুন্নবী ভুট্টু জানান, কোলকোন্দ ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু ও এলাকাবাসীর সহযোগিতায় তিস্তার ভাঙন থেকে রক্ষা পেতে প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে স্বেচ্ছাশ্রমে বাঁধটি নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু হঠাৎ পানি বেড়ে বাঁধটির প্রায় ৩০০ মিটার ভেঙে গেছে। পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকলে বাঁধটি রক্ষা করা কঠিন হয়ে যাবে।

বাঁধ ভেঙে যাওয়ার ফলে চরের আবাদি জমির বাদাম, ভুট্টাসহ বিভিন্ন ফসল ও সবজি পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া বাঁধটি রক্ষার জন্য সামনে আর একটি সাপোর্ট বাঁধ স্বেচ্ছাশ্রমে দেওয়া হয়েছিল। সেটিও ভেঙে গেছে। ভাঙন ও তলিয়ে যাওয়ার হুমকিতে পড়েছে বিনবিনা, বাঘেরহাট, শংকরদহ, পূর্ব ইচলিসহ আশপাশের কয়েক গ্রামের ঘরবাড়ি। ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে এসকেবাজার-সংলগ্ন রংপুর-কাকিনা রোডের ব্রিজ ও চরের রাস্তাঘাট।

স্থানীয় আমবর আলী, জহুরুল ইসলাম, মোবারক হোসেন জানান, গেল কয়েক বছরের বন্যায় মূল তিস্তা সরে এসে মহিপুর শেখ হাসিনা সড়ক সেতুর নিচ দিয়ে পানি কম প্রবাহিত হচ্ছে। এসকেবাজার-সংলগ্ন ব্রিজ দিয়ে এখন তিস্তার পানি প্রবাহ বেড়েছে। বিনবিনার বাঁধটি নির্মাণ ও রক্ষা করা গেলে মূল তিস্তা হয়ে প্রবাহিত হবে। এতে করে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি থেকে চরের মানুষ রক্ষা পাবেন।

এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান সোহরাব আলী রাজু বলেন, চরবাসীকে তিস্তার ক্ষয়ক্ষতি থেকে রক্ষার্থে বর্ষা মৌসুমের আগেই প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে স্বেচ্ছাশ্রম বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু অসময়ে তিস্তায় পানি বৃদ্ধি ও বিনাবিনার চরে পানির তীব্র স্রোতে বাঁধটির বেশির ভাগ অংশ ভেঙে গেছে।

রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী সহিদ হোসেন জানান, ভারত থেকে নেমে আসা পানির কারণে তিস্তার গঙ্গাচড়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিনবিনা চরের বাঁধটি রক্ষায় পরিকল্পিতভাবে কাজ করা হবে।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএসআর