আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই নোয়াখালীর বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা বলেছেন, কোম্পানীগঞ্জে অস্ত্রের ঝনঝনানি চলছে। চোরাগোপ্তা হামলা চালানো হচ্ছে।

তিনি বলেন, ‘রোববার আমাদের বসুরহাট পৌরসভা যুবলীগের সহসভাপতি শিপনের দোকানে হামলা হয়েছে, আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগের দিন (শনিবার) আমার দলের ১৫ জনকে গুলি করা হয়েছে। এগুলো কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসনের ছত্রছায়ায় হচ্ছে।’

সোমবার (৩১ মে) বিকেলে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার মুছাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন আয়োজিত ঈদ পরবর্তী সৌজন্য সাক্ষাৎ ও চা চক্র অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।

কাদের মির্জা বলেন, ‘চরাঞ্চলে অপরাজনীতির হোতা বাদইল্যা (বাদল), ইয়াবা ব্যবসায়ী রাহাইত্তা (রাহাত), কানা রাজ্জাইক্কা (রাজ্জাক) ও মুছাপুরের শাহীন্না (শাহীন) ভূমিহীনদের সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে। ভূমিহীনদের থেকে জমির নথি সাত হাজার টাকা করে কিনে সোনাপুর, মাইজদী ও চৌমুহনীর লোকজনের কাছে চার লাখ টাকা করে বিক্রি করছে। পুলিশ ও উপজেলা প্রশাসন টাকা খেয়ে চুপ করে রয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘ওসির নেতৃত্বে থানায় গোল ঘর বসানো হয়েছে। সেখানে সালিশ বাণিজ্যের নামে জনগণের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আমি চিকিৎসা করাতে আগামী ৯ জুন ১০ দিনের জন্য আমেরিকায় যাচ্ছি। ফিরে এসে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে গোল ঘর বন্ধ করে দেব। ভূমিদস্যুরা চরের ভূমিহীনদের যে কোটি কোটি টাকার সম্পত্তি দখল করে নিয়েছে সেগুলো উদ্ধার করে তাদের ফিরিয়ে দেব।’

কাদের মির্জার অনুসারী মুছাপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি জসীম উদ্দিন বাবরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- মুছাপুর ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী লীগ থেকে চেয়ারম্যান প্রার্থী আইয়ুব আলী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু নাছের, সাধারণ সম্পাদক মো. ইউনুছ, বসুরহাট পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জামাল উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আবুল খায়ের প্রমুখ।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশে কাদের মির্জা বলেন, ‘আপনারা শান্ত থাকুন। নিজ থেকে আক্রমণ করবেন না। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শুরু থেকে আজ পর্যন্ত আমার সঙ্গে আছেন। আমাকে স্নেহ করেন, আদর করেন, তার সঙ্গে আমার চারবার টেলিফোনে কথা হয়েছে। আমি উনাকে মোবাইলে একটি ম্যাসেজ দিয়েছি যে, আপা আমার উপর আক্রমণ করা হয়েছে। তিনি আমাকে শান্ত থাকার জন্য বলেছেন। তাই আমি শান্ত আছি। ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে আমার কিছুটা দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছিল। কারণ উনি এই এলাকার এমপি, তিনি চাইলে রাজনৈতিক সমস্যা সমাধান করতে পারতেন। এখন সেটার অবসান হয়েছে। এসব দেখে আমার প্রতিপক্ষ মিয়াচানরা পাগল হয়ে গেছে। বাইকে করে এসে মিটিং চলাকালে গুলি করে চলে যায়। রাতের আঁধারে হামলা করে, বাড়ি ঘরে আগুন লাগিয়ে দেয়।’

উল্লেখ্য, বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আবদুল কাদের মির্জা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাই। বসুরহাট পৌরসভায় দ্বিতীয় মেয়াদে গত ডিসেম্বরে নির্বাচনের আগে বিভিন্ন ইস্যুতে কথা বলে আলোচনায় আসেন তিনি।

হাসিব আল আমিন/এসকেডি