গোপাল চন্দ্র দাস

জীবনের শেষ সময়ে একটু ভালো থাকার আসায় ১৫ বছর ধরে বয়স্কভাতা কার্ডের জন্য স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মেম্বারের কাছে আশ্বাস পেলেও এখনো জোটেনি তার কপালে। শেষ পর্যন্ত বয়স্কভাতার কার্ড পাওয়ার আসাই ছেলে দিয়েছেন কুড়িগ্রামের গোপাল চন্দ্র দাস (৮০)। ওই বৃদ্ধ কুড়িগ্রাম সদরের মোগলবাসা ইউনিয়নের সিতাইঝাড় গ্রামের বাসিন্দা।

গোপাল চন্দ্র দাস আক্ষেপ নিয়ে বলেন, ‌‘১৫ বছর থেকে কতজন আসলো আর গেল ইউনিয়ন পরিষদে, সবাই দিতে চায় বয়স্কভাতার কার্ড, কেউ আর দেয় নাই। এবারও কাগজপত্র নিজে আমার কাছ থেকে। বয়স্কভাতা হয়েছে কি না, এখনো বলতে পারছি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমি আর বয়স্কভাতার জন্য কাউকে চাপ দেই না কারণ নিঃশ্বাসের তো কোনো বিশ্বাস নাই। এখনি যদি মরে যাই। তাই এখন আসা ছেড়ে দিয়েছি। আমি যদি আগে টাকা দিতাম অবশ্যই আমার ভাতা হতো। আমি তো টাকা দিয়ে বয়স্কভাতা করব না, হলে হবে না হলে নাই।’

জানা যায়, গোপাল চন্দ্র দাস ১৯৪২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। পেশায় তিনি একজন দর্জি ছিলেন। বয়স হওয়ার কারণে দর্জির কাজ ছেড়ে দিয়েছেন। গোপাল চন্দ্র দাসের স্ত্রী ৭ বছর আগে মারা গেছেন। তিন ছেলে ও দুই মেয়ে রয়েছে তার।

বড় দুই ছেলে ব্যবসা ও ছোট ছেলে লেখাপড়া করছেন। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছেন তিনি। গত ১৫ বছর থেকে বৃদ্ধ গোপাল চন্দ্র দাসের কাগজপত্র নিয়েছেন স্থানীয় অনেক জনপ্রতিনিধিরা কিন্তু বয়স্কভাতা তার কপালে জোটেনি।  

প্রতিবেশী সুভাষ চন্দ্র দাস বলেন, ‘বয়স্কভাতা সরকার দিচ্ছে, এসব লোকজন পাবেন। কিন্তু তারা তো পাচ্ছেন না। এখন তো গোপাল চন্দ্র আয় করতে পারেন না; ছেলের সংসারে থাকেন। এই বয়সে যদি বয়স্কভাতাটা পেতেন তাহলে নিজের খরচটা তো করতে পারতেন।’

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান বলেন, ওই বৃদ্ধ যদি বয়স্কভাতা না পেয়ে থাকেন, কাগজপত্র নিয়ে আসলে বয়স্কভাতা করে দেওয়া হবে।

জুয়েল রানা/এমএসআর