ধসে পড়ার পর পিলারটি আবার নির্মাণ করে দেওয়া হয়

খাগড়াছড়ির মহালছড়ি উপজেলার সদর ইউপি চেয়ারম্যান রতন কুমার শীলের অনিয়মের হাত থেকে রক্ষা পাননি শারীরিক প্রতিবন্ধী আবুল কাইয়ুম। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘর পেয়ে অসন্তুষ্ট এই প্রতিবন্ধী কাইয়ুম। নির্মাণকাজ শেষ হওয়ার আগেই ধসে পড়েছে পিলার। পরে ভেঙে পড়া পিলার ঠিক করে দেওয়া হয়।

ঘর তৈরির জন্য যা কিছু দেওয়ার কথা কোনো কিছুই সঠিকভাবে দেওয়া হয়নি। ব্যবহার করা হয়নি পর্যাপ্ত রট ও সিমেন্ট। বাতাসে পড়ে যাচ্ছে বারান্দার পিলার। ব্যবহার করা হয়েছে নিম্নমানের সামগ্রী।

জানা যায়, প্রতিবন্ধী আবুল কাইয়ুম (৩৭) মহালছড়ি উপজেলার সদর ইউপির চোংড়াছড়ি গুচ্ছগ্রামের বাসিন্দা। ১৩ বছর আগে বিয়ে করেন সালমা বেগমকে। বর্তমানে তার তিন ছেলেসন্তান রয়েছে।

এই তিন ছেলের পড়াশোনা ও পরিবারের খরচ বহন করা তার পক্ষে অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। মহালছড়ি বাজারে দোকান ছিলো তার। সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হওয়া পর আর দোকান পরিচালনা করতে পারেননি তিনি। বর্তমানে তিনি প্রতি মঙ্গলবার মহালছড়ি বাজারদিন হেঁটে হেঁটে খিলি পান বিক্রি করেন। এর থেকে আয় হওয়া অর্থ দিয়ে চলে তার সংসারের খরচ।

তিনি প্রতিবন্ধী হলেও কারও কাছে কখনো হাত পাতেন না। নিজে কষ্ট করে চলার চেষ্টা করেন নিজের মতো। এছাড়া যদি কেউ মন থেকে ভালোবেসে তাকে কোনো সহযোগিতা করেন তাতে তিনি কোনো আপত্তি রাখেন না। স্বাদরে গ্রহণ করেন আবুল কাইয়ুম।

ঘরের অনিয়ম সম্পর্কে জানতে চাইলে আবুল কাইয়ুম ঢাকা পোস্টকে বলেন, সরকার অসহায়দের জন্য যে ঘর বরাদ্দ দিয়েছে তা আমাদের জন্য খুবই সোভাগ্যের বিষয়। কিন্তু চেয়ারম্যান আমাদের ঘরের কাজ এতো নিম্নমানের করতেছে যা বসবাসের অযোগ্য। এই ঘরে বাস করতে এখন ভয় লাগছে।

সদর ইউপি চেয়ারম্যান রতন কুমার শীল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ, তা সঠিক নয়। আমি যে কাজ করেছি তার গুণগত মান তেমন খারাপ হয়নি। এখানকার লোকাল যে জিনিস আছে তা দিয়েই কাজ করছি।

মহালছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জোবাইদা আক্তার বলেন, আমি নতুন যোগদান করেছি। কাজের মান কেমন হয়েছে এখনো জানি না। যদি কেউ সঠিক তথ্যপ্রমাণ নিয়ে আমাদের কাছে আসে তাহলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জাফর সবুজ/এমএসআর