করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী বাউলি গ্রামে সাতদিনের লকডাউন ও পার্শ্ববর্তী ছয়টি ইউনিয়নের মানুষের চলাচলে কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে জেলা প্রশাসন। 

বৃহস্পতিবার (৩ জুন) দুপুরে জেলা প্রশাসকের হল রুমে করোনা প্রতিরোধ কমিটির আলোচনা সভায় জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান এ ঘোষণা দেন। মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ছয়টি ইউনিয়ন হলো নেপা, কাজীরবেড়, শ্যামকুড়, স্বরূপপুর, বাঁশবাড়িয়া ও যাদবপুর।

উপজেলার ৬ নম্বর নেপা ইউনিয়নের বাউলি গ্রামের দুটি পরিবারের ছয়জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ায় গ্রামটি ৩ জুন থেকে ১০ জুন পর্যন্ত সাতদিনের লকডাউন ঘোষণা করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে প্রশাসন। লকডাউন না মেনে কেউ আইন অমান্য করলে প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

একই সঙ্গে এসব বিধিনিষেধ কার্যকর করতে বৃহস্পতিবার থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে মাঠে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

নেপা ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাহাবুল ইসলাম জানান, আমার ওয়ার্ডের বাউলিয়া গ্রামের শাহবুল ইসলাম, শাহাবুলের স্ত্রী, মা, ছোট ভাই ও মেয়ে এবং পাশের বাড়ির রুহুলসহ মোট ছয়জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ১৪/১৫ দিন ধরে তারা হাসপাতালে ভর্তি আছে। আজ জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের বাউলিয়া গ্রামকে লকডাউন করা হয়েছে। এছাড়াও পুরো ইউনিয়নে সন্ধ্যার পর ওষুধের দোকান ছাড়া যে কোনো ধরনের দোকানপাট খোলার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।

৮ নম্বর বাঁশবাড়ীয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. আব্দুল মালেক মন্ডল জানান, ভারত থেকে প্রতিনিয়ত অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঢুকছে মানুষ। তারা বেশির ভাগ সময় সীমান্তের পাশাপাশি গ্রামে আশ্রয় নেয়। কিছু কিছু মানুষের শরীরে করোনাভাইরাস ধরা পড়েছে। আবার আমাদের পার্শ্ববর্তী নেপা ইউনিয়নের বাউলিয়া গ্রামের ছয়জনের শরীরে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের নির্দেশে ওই গ্রামকে লকডাউন করা হয়েছে। এছাড়াও আমার ইউনিয়নসহ সীমান্তবর্তী ছয়টি ইউনিয়নে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। আমরা সীমান্তবর্তী এলাকার মানুষ খুবই চিন্তায় আছি।

ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান বলেন, মহেশপুর উপজেলার বাউলিয়া গ্রামের একই পরিবারের পাঁচজনসহ ছয়জন করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন। ফলে পরিস্থিতি বিবেচনায় ৩ জুন থেকে আগামী ১০ জুন পর্যন্ত ওই এলাকা লকডাউনসহ মহেশপুর উপজেলার সীমান্তবর্তী ছয়টি ইউনিয়নে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। সন্ধ্যার পর থেকে ওষুধের দোকান ছাড়া সকল দোকানপাট বন্ধ থাকবে। কেউ জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাহিরে বের হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সীমান্তবর্তী এলাকাকে কঠোর নজরদারিতে রাখা হয়েছে। 

আব্দুল্লাহ আল মামুন/আরএআর