কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় বজ্রপাতে দুই স্কুলছাত্রীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে একজন। মঙ্গলবার (৬ মে) দুপুরে উপজেলার চরটেকী নামাপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলো- উপজেলার চরটেকী গ্রামের জালাল উদ্দিনের মেয়ে ফারিয়া জান্নাত ইরিনা (১৫) ও  একই গ্রামের বাদল মিয়ার মেয়ে আদ্রিতা জান্নাত প্রিয়া (১৫)। এছাড়া একই গ্রামের বোরহান উদ্দিনের মেয়ে বর্ষা (১৫) গুরুতর আহত হয়েছে। এরা সবাই চরটেকী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৯ম শ্রেণির শিক্ষার্থী। 

জানা গেছে, দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঝড়সহ বৃষ্টিপাত শুরু হয়। বাড়ি থেকে স্কুলে যাওয়ার সময় চরটেকী নামাপাড়া নেমার বাড়ির সামনে পৌঁছালে ঝড়বৃষ্টির কবলে পড়ে তিন স্কুলছাত্রী। এ সময় ঝড়ের সাথে বজ্রপাত হলে গুরুতর আহত হয় তিনজন। পরে তাদেরকে উদ্ধার করে দ্রুত পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক ফারিয়া জান্নাত ইরিনা ও আদ্রিতা জান্নাত প্রিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া আহত বর্ষাকে শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়।

নিহতদের সহপাঠী আফরিন সুলতানা বলেন, আমাদের  মাসিক মূল্যায়ন পরীক্ষা চলছে। দ্বিতীয় শিফটে পরীক্ষা থাকায় তারা স্কুলের উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হলে পথে বজ্রপাতে রাস্তায় পড়ে যায় তিনজন। আমাদের এক প্রতিবেশী আন্টি তাদের রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে চিৎকার করে। পরে সবাই এগিয়ে এসে হাসপাতালে নিয়ে গেলে দুই মারা যায়।

চরটেকী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের সিনিয়র শিক্ষক মোমেনা খাতুন বলেন, মারা যাওয়া দুই ছাত্রী মেধাবী। তারা বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থী। একজন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

চরটেকী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মো. আমিনুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, বিদ্যালয়ে অভ্যন্তরীণ পরীক্ষা চলছে। মঙ্গলবার দুপুর ১টায় ৯ম শ্রেণির বাংলা ১ম পত্র পরীক্ষার জন্য সময় নির্ধারিত ছিল। এই পরীক্ষায় অংশ নেওয়ার জন্য ইরিনা, প্রিয়া ও বর্ষা বাড়ি থেকে স্কুলে আসছিলো। পথে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হলে বজ্রাঘাতে তিনজনই গুরুতর আহত হয়। তাদের উদ্ধার করে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়ার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক ইরিনা ও প্রিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। এছাড়া গুরুতর আহত বর্ষাকে কিশোরগঞ্জে রেফার্ড করা হয়। এ ঘটনায় স্কুলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন জানান, হাসপাতালে গিয়ে পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দাফন-কাফনের জন্য আর্থিক সহযোগিতা করা হবে।

মিঠামইনে কৃষক নিহত

এদিকে একই সময় জেলার হাওর উপজেলা মিঠামইনের ঘাগড়া ইউনিয়নের চমকপুর বন্দে গরু আনতে গিয়ে কটু মিয়া (৪০) নামে এক কৃষক বজ্রপাতে মারা গেছেন। তিনি চমকপুর গ্রামের মৃত আব্দুল মোতালিবের ছেলে। 

মিঠামইন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিউল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কৃষক কডু মিয়া দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাড়ির পাশে হাওরে যান। এ সময় হঠাৎ বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত হলে ঘটনাস্থলেই কডু (৩৫) মিয়া মারা যান।

মোহাম্মদ এনামুল হক হৃদয়/আরকে/আরএআর