সেনাবাহিনী প্রধান ও বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সেক্টর কমান্ডার রাজশাহীর লোক দাবি করে গরু ব্যবসায়ীদের থেকে টাকা দাবি করা দুই প্রতারককে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২২ মে) দুপুরে নগরীর গোরহাঙ্গা এলাকার গুলশান হোটেল থেকে গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বিজিবি তাদের আটক করে।

আটককৃতরা হলেন- নোয়াখালীর কালিকাপুর গ্রামের মৃত ওয়াজিউল্ল্যাহ মিয়ার ছেলে নিজাম উদ্দিন (৭১), নেত্রকোণার খাগড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রশিদ খাঁনের ছেলে মেহেদী হাসান (৫৫)। পরে তাদের শালবাগান এলাকার রাজশাহী ব্যাটালিয়ন সদরে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এ সময় তারা জানায়, দুজনে অবৈধভাবে গরু চোরাচালানের মধ্যস্থতা করে উৎকোচ গ্রহণের কাজ করে।

পরে দুই প্রতারক আটকের বিষয়ে বিকেল সাড়ে ৫টায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) রাজশাহী ১ সদর দপ্তরে প্রেস কনফারেন্স করা হয়। তারা গত ২০ মে ঢাকা থেকে রাজশাহীর গুলশান হোটেলে ওঠে বলে জানানো হয়। 

রাজশাহী ব্যাটালিয়ান বিজিবি-১ এর সিও লে. কর্নেল. হাসিবুল হক জানান, তাদের মধ্যে আটককৃত নিজাম উদ্দিন নিজেকে সেনাপ্রধানের লোক বলে দাবি করেন। আর মেহেদী হাসান নিজেকে এমইএসের ঠিকাদার হিসেবে দাবি করেন।

তিনি আরও বলেন, তারা গরু ব্যবসায়ীদের মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে বলেন বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান এবং মহাপরিচালক বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সঙ্গে তাদের বিস্তারিত কথা হয়েছে। সীমান্ত দিয়ে ভারত থেকে বাংলাদেশে গরু নিয়ে আসতে কোনো অসুবিধা নাই। এছাড়াও দুই প্রতারক ব্যবসায়ীদের সেক্টর কমান্ডার বিজিবি রাজশাহীর বরাত দিয়ে জানান- সেক্টর কমান্ডার বলেছেন গরু চোরাচালানের উদ্দেশে বর্ডার খুলে দেওয়া হবে। মেহেদী হাসান ব্যবসায়ীদের বলেন- যাদেরকে নির্বাচন করবো শুধুমাত্র তারাই ভারত থেকে গরু আনতে পারবে। এ ব্যাপারে সেক্টর কমান্ডার বিজিবি রাজশাহী প্রয়োজনীয় অনুমতি দেওয়ার জন্য আজ (বৃহস্পতিবার) সন্ধ্যায় হোটেলে আগমন করবেন।

তিনি বলেন, ভারত থেকে প্রতিজোড়া গরু ৩৫ হাজার টাকা দাবি করে তারা। একই সঙ্গে তারা ১০ হাজার গরু বর্ডার পার করে দেওয়ার বিনিময়ে ২০ লাখ টাকা অগ্রিম দাবি করেন। তারা উচ্চপদস্ত সামরিক কর্মকর্তাগণের নাম ভাঙিয়ে নিজেদের স্বার্থ সিদ্ধির জন্য অভিনব কায়দায় ব্যবসায়ীদের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার কৌশল অবলম্বন করেন।

বিজিবি জানায়, তাদের থেকে তিনটা চেক বই, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের একটা ট্রেড লাইসেন্স ও নগদ প্রায় ৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন বলে জানায় বিজিবি।

শাহিনুল আশিক/আরএআর