ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান তুষ্টি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইসরাত জাহান তুষ্টির মরদেহ উদ্ধারের সংবাদে ওই শিক্ষার্থীর গ্রামের বাড়িতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। রোববার (৬ মে) সকালে রাজধানীর আজিমপুর এলাকার সরকারি স্টাফ কোয়ার্টারের একটি বাসা থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এদিকে মেধাবী এই শিক্ষার্থীর হঠাৎ এমন মৃত্যুসংবাদ যেন মেনে নিতে পারছেন না পরিবার-পরিজনসহ এলাকাবাসী ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাও।

ইসরাত জাহান তুষ্টি নেত্রকোনার আটপাড়া উপজেলার ৭ নম্বর সুখারী ইউনিয়নের নীলকণ্ঠপুর গ্রামের ধান ব্যবসায়ী আলতাফ উদ্দিনের মেয়ে। আলতাফ উদ্দিনের ৪ সন্তানের মধ্যে একমাত্র মেয়ে তুষ্টি।

জানা যায়, তুষ্টি স্থানীয় ধর্মরায় রামধন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিসহ পঞ্চম শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হন। পরে স্থানীয় ধর্মরায় রামধন উচ্চবিদ্যালয় থেকে অষ্টম শ্রেণি এবং ২০১৬ সালে জিপিএ-৪.৯৮ পেয়ে এসএসসি উত্তীর্ণ হয়। ২০১৮ সালে পার্শ্ববর্তী মদন উপজেলার জুবায়েদা রহমান মহিলা কলেজ থেকে জিপিএ-৪.৬৭ পেয়ে এইচএসসি উত্তীর্ণ হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে পড়াশোনা করার গৌরব অর্জন করেন।

ইসরাত জাহান তুষ্টির চাচা প্রভাষক ইমাম হোসেন মেহেদী ঢাকা পোস্টকে বলেন, তুষ্টির ছোটবেলা থেকে পড়াশোনাসহ সবকিছুই আমি দেখাশোনা করেছি। তাকে নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন ছিল। এলাকার মানুষও তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখত। কিন্তু আজ সব শেষ হয়ে গেল।

তিনি বলেন, শনিবার (৫ জুন) তুষ্টি বৃষ্টিতে ভিজেছিল। এ জন্য কিছুটা ঠান্ডা লেগেছিল তার। এ ছাড়া আর অন্য কোনো রোগ বা সমস্যা তার ছিল না। হঠাৎ তুষ্টির মৃত্যুটি স্বাভাবিক মৃত্যু হিসেবে আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। তার মৃতদেহের ময়না তদন্ত করানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর মূল কারণ জানা যাবে বলেও জানান তিনি।

ধর্মরায় রামধন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রমজান আলী মির্জা বলেন, তুষ্টি আমার বিদ্যালয়ের একজন মেধাবী ছাত্রী ছিল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ করে নেওয়ার পর আমরা স্বপ্ন দেখেছিলাম যে তুষ্টির মাধ্যমে আমাদের বিদ্যালয়ের একটি ফুল ফুটতে যাচ্ছে। যার সৌরভ দেশবাসী পাবে। কিন্তু সে স্বপ্ন আর পূরণ হলো না। তার মৃত্যুতে আমরা শোকাহত, যা প্রকাশের ভাষা হারিয়ে ফেলেছি।

স্থানীয় ৭ নম্বর সুখারী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কফিল উদ্দিন খোকন তালুকদার ঢাকা পোস্টকে তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ইসরাত জাহান তুষ্টির মৃত্যুর খবরটি শুনেছি। মেয়েটি ছোটবেলা থেকেই শান্ত ও ভদ্র প্রকৃতির ছিল। তবে কী কারণে সে মারা গেছে, সে বিষয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি বলেও জানান চেয়ারম্যান।

মদন থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাফর ইকবাল ঢাকা পোস্টকে বলেন, খবর পেয়ে পরিবারের লোকজন মরদেহ আনার জন্য ঢাকায় গিয়েছেন।

মো. জিয়াউর রহমান/এনএ