মনের আনন্দ থেকে কোনোপ্রকার পারিশ্রমিক ছাড়াই শিশু ও বয়স্কদের কোরআন শিক্ষা দিতে পেরে খুশি এক কৃষক। মহামারি করোনাভাইরাসের প্রভাবে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে শিক্ষা খাত।

এই দুর্যোগকালীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীসহ বয়স্ক অনেককেই ১ বছর থেকে কোরআন শিক্ষা দিচ্ছেন ইউনুস আলী (৫০)। ওই কৃষক কুড়িগ্রামের রাজারহাট সদর ইউনিয়নের নাপাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা।

প্রতিদিন সন্ধ্যা থেকে শুরু করে নাপাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বারান্দায় বসে কোরআন শিক্ষা দিচ্ছেন ছোট ছোট ছেলে-মেয়েসহ অনেক বৃদ্ধ মানুষকে। রোববার (৬ জুন) সন্ধ্যায় একটি স্কুলের বারান্দায় শিশু ও বয়স্কদের কোরআনে শিক্ষা দেওয়ার এমনই চিত্র দেখা গেছে।

নাপাডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী শাহিনা আক্তার বলেন, ‘স্কুল বন্ধ থাকায় লেখাপড়া করতে মন বসছে না। আমার অনেক বন্ধুসহ হুজুরের কাছে প্রতিদিন সন্ধ্যায় আরবি শিখতে আসি আমরা। হুজুর সুন্দর করে আরবি শিখাচ্ছেন, পাশাপাশি কীভাবে নামাজ আদায় করতে হয় তাও শিখছি।’ 

নাপাডাঙ্গা গ্রামের ইয়াসিন নামের এক বৃদ্ধ বলেন, আমি কোরআন শরিফ পড়তে পারতাম না। এখানে এসে ছোট ছোট বাচ্চাদের সঙ্গে থেকে আমিও কোরআন শিখছি। সন্ধ্যায় এখানে সবার সঙ্গে কোরআনে শিক্ষা নিতে খুবই ভালো লাগে।

কৃষক ইউনুস আলী বলেন, আমি মাদরাসা লাইনে পড়াশোনা করেছি। কোরআন বিষয়ে সামান্য কিছু জানা আছে আমার। সেই আলোকে এক বছর থেকে ছোট ছেলেমেয়েসহ অনেক বয়স্ক মানুষকে কোরআন বিষয়ে একটু শেখানোর চেষ্টা করছি। আমি আসলে মনের আনন্দ থেকে এ কাজ করছি এবং কোনো পারিশ্রমিক আমি নেই না।

তিনি আরও বলেন, সন্ধ্যা থেকে এশার আজান পর্যন্ত তাদেরকে পড়াই, এশার নামাজের পর বাড়িতে যাই। একদিন তো মৃত্যুবরণ করতে হবে, সেইদিন যেন আমার ছাত্রছাত্রীরা আমার পাশে বসে কোরআন পড়তে পারে, এটাই আমার বড় চাওয়া।

জুয়েল রানা/এমএসআর