টানা বৃষ্টিতে উপকূলীয় জনজীবনে দুর্ভোগ, অনেক পরিবার পানিবন্দি
উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় লঘুচাপ নিম্নচাপে পরিণত হওয়ায় উপকূলীয় জেলা পটুয়াখালীতে বিরূপ প্রভাব পড়েছে। কয়েকদিন ধরে থেমে থেমে বৃষ্টিপাত চললেও বুধবার (২৮ মে) সন্ধ্যার পর থেকে শুরু হয় টানা ভারী বর্ষণ।
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) সকাল ৯টা পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় ৭৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস।
বিজ্ঞাপন
টানা বৃষ্টির কারণে পটুয়াখালীর বিভিন্ন নিচু এলাকায় সৃষ্টি হয়েছে জলাবদ্ধতা। অনেক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে নিম্ন আয়ের ও খেটে খাওয়া মানুষ পড়েছেন চরম বিপাকে। রিকশাচালক, দিনমজুরসহ খোলা আকাশের নিচে কাজ করা মানুষজনের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে। এছাড়াও দুর্ভোগে পড়েছে স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীরা।
অপরদিকে, নিম্নচাপের প্রভাবে জেলার অভ্যন্তরীণ নদ-নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। নদীতে জোয়ারের পানি বাড়ায় বৃষ্টির পানি দ্রুত নিষ্কাশন হচ্ছে না। ফলে জলাবদ্ধতা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে উঠছে।
বিজ্ঞাপন
আরও পড়ুন
জৈনকাঠী ইউনিয়নের কৃষক আলম গাজী বলেন, ‘এক সপ্তাহ আগে দেড় একর জমিতে আউশ ধানের চারা রোপণ করেছি। কয়েকদিনের বৃষ্টিতে সব জমি পানির নিচে। পানি না কমলে চারা নষ্ট হয়ে যাবে!’
আব্দুল হক নামে এক রিকশাচালক বলেন, বৃষ্টিতে সকাল থেকে রাস্তায় লোক নেই। বৃষ্টির মধ্যেই বের হয়েছি, কিন্তু যাত্রী নাই। ঘরে বসে থাকলে খাওয়া বন্ধ হয়ে যাবে।
স্কুল শিক্ষার্থী হুজাইফা আক্তার বলেন, ’জুবিলী স্কুলের সামনে থেকে আমাদের স্কুলে যেতে হয় কিন্তু সড়কটির মধ্যে অতিরিক্ত পানি থাকায় রিকশা যেতে হয়। কিন্তু বৃষ্টির কারণে রিকশাও পাচ্ছি না তাই পা ডুবিয়ে হেঁটেই যাচ্ছি।’
এদিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস অনুযায়ী, উপকূলীয় অঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে। সেই সঙ্গে ঝোড়ো হাওয়ারও আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, পায়রা ও মোংলা সমুদ্র বন্দরে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ৬৫ ফুট দৈর্ঘের নিচে সব নৌযান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
পটুয়াখালী আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাহবুবা সুখী বলেন,‘উপকূলীয় এলাকায় বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়ছে। অতি ভারী বৃষ্টিপাত এবং দমকা হাওয়া বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। স্থানীয়দের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
প্রাকৃতিক এই বৈরী অবস্থায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উপকূলীয় পটুয়াখালীতে। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে দুর্ভোগ আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন স্থানীয়রা।
রায়হান/আরকে