যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের ঝিকরগাছা অংশের মরা গাছ ও ঝুঁকিপূর্ণ ডাল কেন অপসারণ করা হয়নি- তার ব্যাখা চেয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ভুপালী সরকার। গাছ অপসারণে গঠিত কমিটিকে আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে লিখিতভাবে এর ব্যাখা দিতে বলা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৪ জুন) ইউএনও স্বাক্ষরিত এক চিঠি সূত্রে এ তথা জানা গেছে।

এর আগে সোমবার (২৩ জুন) ঢাকা পোস্টে ‌‘নির্দেশনার পরও শতবর্ষী ঝুঁকিপূর্ণ গাছ অপসারণে ব্যর্থ ঝিকরগাছা প্রশাসন’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদটি ইউএনওর দৃষ্টিগোচর হলে তিনি বিষয়টির ব্যাখা চেয়ে চিঠি দেন।

সংবাদের উদ্বৃতি দিয়ে চিঠিতে বলা হয়, যশোর-বেনাপোল জাতীয় মহাসড়কের উভয় পার্শ্বে যশোর জেলা পরিষদের মালিকানাধীন ঝিকরগাছা উপজেলার বিভিন্ন স্থানে শতবর্ষী মরা গাছ ও ঝুঁকিপূর্ণ ডালপালা প্রায় সময় ভেঙে পথচারী নিহত/আহত এবং যানবাহনের ক্ষতি হচ্ছে মর্মে এগুলো অপসারণ করার নির্দেশনা প্রদান করা হয় এবং নির্দেশনা মোতাবেক বর্ণিত ঝুঁকিপূর্ণ ডালপালা কর্তন ও তদারকিসহ জেলা পরিষদের জায়গায় সরানোর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার নিমিত্তে ঝিকরগাছা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাভিদ সারওয়ারকে আহ্বায়ক করে ৭ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটির সদস্যরা গত ১৭ মে সরেজমিনে পরিদর্শনপূর্বক মোট ৫৮টি মরা গাছ ও ৩২টি ঝুঁকিপূর্ণ গাছ মার্কিং করে। পরে গাছ ও গাছের ডালপালা কর্তন ও অপসারণ বাবদ প্রতি ঘনফুট ১৫০ টাকা হারে সাত লাখ সত্তর হাজার দুইশত পঞ্চাশ টাকা ব্যয় মূল্য নির্ধারণ করেন। তবে কর্তনকৃত গাছ ও ডালের মূল্যসহ পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করার অনুরোধ জানানো হলেও তা পাওয়া যায়নি।

চিঠিতে আরও বলা হয়, ‘ঢাকা পোস্ট’ অনলাইনে ‘নির্দেশনার পরও শতবর্ষী ঝুঁকিপূর্ণ গাছ অপসারণে ব্যর্থ ঝিকরগাছা প্রশাসন’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। প্রতিবেদনে দেখা যায়, একই নির্দেশনায় ঝিকরগাছা পার্শ্ববর্তী শার্শায় শতবর্ষী ঝুঁকিপূর্ণ গাছ ও গাছের ডাল প্রায় ৮০ শতাংশ অপসারণ করা হয়েছে। কিন্তু ঝিকরগাছা উপজেলায় কোনো গাছ কর্তন বা অপসারণ করা হয়নি। যা কাম্য নয়। এমতাবস্থায় ঝিকরগাছায় মরা গাছ ও গাছের ঝুঁকিপূর্ণ ডালপালা কর্তন ও অপসারণে কেন পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করা হয়নি এবং তা অপসারণে কেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি সে বিষয়ে আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে লিখিত আকারে জানানোর জন্য বলা হলো।

এ বিষয়ে মরা-ঝুঁকিপূর্ণ গাছ অপসারণ কমিটির আহ্বায়ক ও ঝিকরগাছা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাভিদ সারওয়ার বলেন, আমি এখনো চিঠি হাতে পাইনি। চিঠি পাওয়ার পর এ বিষয়ে কথা বলতে পারব। 

গাছ ও ডাল অপসারণের বিষয়ে তিনি বলেন, অপসারণের পূর্ববর্তী সকল কার্যক্রম প্রায় শেষের পথে। আশা করছি খুব দ্রুত ঝুঁকিপূর্ণ গাছ ও ডাল অপসারণ শুরু হবে।  

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ভুপালী সরকার বলেন, নির্দেশনা পেয়েও ঝুঁকিপূর্ণ গাছ অপসারণ করতে না পারা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কেনো গাছ ও ডাল অপসারণ করা সম্ভব হয়নি সে বিষয়ে কমিটিকে লিখিতভাবে ব্যাখা দিতে বলা হয়েছে। তিন কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাখা না পেলে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হবে।

আরএআর