পর্যটন হুমকিতে কুয়াকাটা
বুকিং কম, আতঙ্ক বেশি : ডেঙ্গুর কালো ছায়া পর্যটন ব্যবসায়
দেশজুড়ে ডেঙ্গুর সংক্রমণের হার বেড়ে যাওয়ায় কুয়াকাটার পর্যটন খাতে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় হোটেল ব্যবসায়ী ও পর্যটন সংশ্লিষ্টরা। সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। যদিও কুয়াকাটায় এখনও ব্যাপক সংক্রমণ দেখা যায়নি। তবে, আশেপাশের এলাকায় রোগের প্রাদুর্ভাব পর্যটকদের মধ্যে ভয়ের সঞ্চার করছে— মনে করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা।
অন্যদিকে চিকিৎসকরা বলছেন, পর্যটন কেন্দ্রের হোটেল, মোটেল, পার্ক, রিসোর্টসহ সব দর্শনীয় স্থান পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। কোথাও যেন ময়লা পানি জমে না থাকে, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
বিজ্ঞাপন
দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। যদিও কুয়াকাটায় এখনও ব্যাপক সংক্রমণ দেখা যায়নি। তবে, আশেপাশের এলাকায় রোগের প্রাদুর্ভাব পর্যটকদের মধ্যে ভয়ের সঞ্চার করছে— মনে করছেন পর্যটন সংশ্লিষ্টরা
বর্তমানে ডেঙ্গুর হটস্পট বলা হচ্ছে বরগুনা জেলাকে। এই জেলায় প্রতিনিয়ত বাড়ছে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। ফলে উপকূলের সাধারণ মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। তারই ধারাবাহিকতায় বরগুনা জেলার পাশের জেলা পটুয়াখালীর পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় আগত পর্যটকদের মধ্যেও বাড়তে পারে আতঙ্ক। তবে চিকিৎসকরা বলছেন, এলাকার সার্বিক পরিস্থিতি এখনও নাগালের বাইরে যায়নি।
বিজ্ঞাপন
এ প্রসঙ্গে হোটেল-মোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট এম এ মোতালেব শরীফ বলেন, ‘আমরা বর্ষাকালকে কেন্দ্র করে যে পর্যটক আশা করেছিলাম, সেই তুলনায় বুকিং অনেক কম। তবে, ঈদে আশানুরূপ পর্যটক হয়েছে কুয়াকাটায়। প্রতি বছরের এই সময়টাতে পর্যটক কিছুটা কম থাকে। কিন্তু এ বছর একটু বেশি কম মনে হচ্ছে।’
কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করছি ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেড়ে যাওয়া। মানুষ স্বাভাবিকভাবেই স্বাস্থ্যঝুঁকি নিতে চায় না।’
কুয়াকাটা বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য রাসেল খান বলেন, ‘পর্যটকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কুয়াকাটার হোটেল, মোটেল ও রেস্টুরেন্টগুলোতে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি মশক নিয়ন্ত্রণে কাজ করা হচ্ছে। পর্যটন নগরীর মধ্যে যেন ডেঙ্গুর সংক্রমণ বেড়ে না যায় সেজন্য ডাক্তারদের পরামর্শ নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।’
‘কুয়াকাটার হোটেল, রিসোর্ট, রেস্টুরেন্ট থেকে শুরু করে পর্যটন সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কাজ চলমান রয়েছে’— বলেন তিনি।
কুয়াকাটা খানাবাদ ডিগ্রি কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক ডা. শহিদুল ইসলাম শাহীন বলেন, ‘কুয়াকাটার মতো জনপ্রিয় পর্যটন এলাকায় ডেঙ্গু প্রতিরোধে আগাম ব্যবস্থা না নেওয়া হলে অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তাই ডেঙ্গুর সংক্রমণ মারাত্মকভাবে ছড়িয়ে পড়ার আগেই সবাইকে যথেষ্ট সতর্ক থাকতে হবে। অসুস্থ হলে চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করতে হবে।’
কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। সাধারণ মানুষের মধ্যে ডেঙ্গু সম্পর্কে সচেতনতামূলক প্রচার-প্রচারণা করা হচ্ছে। তবে, পাশের জেলা ডেঙ্গুর হটস্পট হলেও সেই তুলনায় এখনও কলাপাড়া উপজেলা অনেকটা ভালো আছে।
কুয়াকাটায় আগত পর্যটক এবং স্থানীয়দের যথেষ্ট সচেতন হয়ে চলাফেরা করার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য বিভাগ।
এমএআর