জাল তালাকনামা দাখিল করে প্রতারণা, বাদীর বিরুদ্ধে মামলা
ফেনীতে স্বামীর বিরুদ্ধে দেনমোহরের মামলায় জাল তালাকনামা দাখিল করে প্রতারণার অভিযোগে নুসরাত জাহান নামে এক বাদীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন আদালত। সোমবার (৩০ জুন) ফেনী আদালতের সহকারী জজ ও সোনাগাজী পারিবারিক আদালতের বিচারক সবুজ হোসেন স্বপ্রণোদিত হয়ে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট সদর আমলি আদালতে এ মামলা করেন।
আদালতের বেঞ্চ সহকারী হারিস মাহমুদ মজুমদার ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
বিজ্ঞাপন
আদালত সূত্রে জানা যায়, বিচারপ্রার্থী নুসরাত জাহান নিজের করা পারিবারিক মামলায় সুবিধা নেওয়ার উদ্দেশ্যে একটি ভুয়া তালাকনামা তৈরি করে তা আদালতে দাখিল করেন। উপস্থাপিত দলিলে তারিখ ঘষামাজা করে প্রতারণার চেষ্টা করা হয়েছে। এটি আইন ও ন্যায়বিচার ব্যবস্থার প্রতি হুমকি স্বরূপ।
এ রায়ে বিচারক মন্তব্য করেন, আদালতে জাল কাগজপত্র দাখিলের মাধ্যমে প্রতারণার চেষ্টা কোনোভাবেই সহনীয় নয়। আদালত এ ধরনের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিজ্ঞাপন
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৮ জুলাই সোনাগাজী উপজেলার আব্দুল গোফরানের সঙ্গে ৭ লাখ টাকা দেনমোহরে নুসরাত জাহানের বিয়ে হয়। পারিবারিক কলহ ও নির্যাতনের অভিযোগে ২০২১ সালের ৮ মে স্বামীকে তালাক দেন তিনি। একই বছরের ৯ সেপ্টেম্বর মোহরানা ও অন্যান্য পাওনা বাবদ ৯ লাখ ৩০ হাজার টাকার দাবিতে আইনজীবীর মাধ্যমে আইনি নোটিশ পাঠানো হয় গোফরানকে। পরবর্তীতে কোনো সমাধান না পেয়ে একই বছরের শেষ দিকে সোনাগাজী উপজেলা পারিবারিক আদালতে মোহরানা ও পাওনার দাবিতে একটি মামলা করেন নুসরাত জাহান। ওই মামলার একাধিক শুনানির পর আদালতের নজরে আসে, বাদীর উপস্থাপিত তালাকনামা ও তথ্যে উল্লেখযোগ্য অসঙ্গতি রয়েছে। যেখানে তারিখ ঘষামাজা করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে নুসরাত জাহানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হাসান মাহমুদ বলেন, আদালত আংশিক রায় দিয়েছেন। আমরা এ বিষয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করব।
অন্যদিকে আব্দুল গোফরানের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মো. শাহাদাত হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, তালাকনামা জালিয়াতির ঘটনায় আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে যে মামলা করেছেন তা অবগত হয়েছি। এ মামলাটি দেশের বিচার ব্যবস্থায় এক বিরল দৃষ্টান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে, যেখানে আদালত নিজেই বাদী হয়ে একজন বিচারপ্রার্থীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। আদালতের এ ধরনের পদক্ষেপ ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় একটি শক্ত বার্তা হিসেবে বিবেচিত হবে।
তারেক চৌধুরী/আরএআর