ঠাকুরগাঁও শহরের ঘোষপাড়া এলাকার বাসিন্দা শৌখিন বাগানি মিন্টু আহমেদ। নিজের বাসার ছাদে গড়ে তুলেছেন একটি বাগান। যেখানে রয়েছে বিভিন্ন প্রজাতির ফলের গাছ। গাছের প্রতি ভালোবাসা থেকে বাড়ির ছাদেই ফল ও সবজির বাগান করে পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণের সঙ্গে ছাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছেন তিনি।

সোমবার (০৭ জুন) দুপুরে শহরের ঘোষপাড়া এলাকায় মিন্টু আহদের বাসায় গেলে এমন একটি চিত্র চোখে পড়ে। প্রায় ৭০ প্রজাতির বিভিন্ন ফলের গাছ নিয়ে শৌখিন এই বাগানি বাড়ির ছাদে গড়ে তুলেছেন বাগানটি।

বাগানে ধরেছে লেবু

ছাদের এই বাগানের উৎপাদিত ফল যেমন নিজেদের চাহিদা মেটায়, অন্যদিকে প্রতিবেশী আত্মীয়-স্বজনদের মাঝেও বিতরণ করেন তিনি। বাগান দেখতে অনেকেই আসছে তার বাড়িতে। স্বল্প খরছে বিভিন্ন দেশ থেকে গাছের চারা এনে নিজের বাসার ছাদে করেছেন সুন্দর এ বাগানটি।

ছাদবাগানে রয়েছে- আম (১৪ জাতের), লিচু, কাঁঠাল, কমলা (৪ জাতের), মাল্টা (৩ জাতের), পেয়ারা (২ জাতের), কামরাঙ্গা, আমড়া, জলপাই, সফেদা, সরিফা, আমলকী, বেদেনা, জাম্বুরা, জামরুল (২জাতের), বেল, আতা, করম-চা, আপেল, নাশপাতি, ড্রাগন ফল, আঙ্গুর (৩ জাতের), বড়ই (২ জাতের), লেবু (২ জাতের), ডালিমসহ দেশি-বিদেশি প্রায় ৭০ প্রজাতির ফলের গাছ।

আমড়া

জানা যায়, ইউটিউবে প্রথম ছাদ বাগান দেখেন মিন্টু আহমেদ। এরপর থেকে তার মনে সাড়া জাগে কী করে নিজের বাসার ছাদে করা যাবে একটি বাগান। বাগানটি যেমন পুষ্টির অভাব দূর করবে ঠিক তেমনি পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষাও করবে। এই চিন্তা নিয়ে ২০১৫ সালে প্রথম দেশের বাইরে থেকে ফল গাছের চারা এনে বাসার ছাদে টবে করে লাগান তিনটি গাছ।

ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে মিন্টুর বাগানে গাছের সংখ্যা। অবশেষে ১ বছরের পর বাসার ছাদটিতে পরিপূর্ণভাবে করতে পেরেছেন একটি বাগান। তার এই বাগান দেখেতে প্রতিবেশীর পাশাপাশি অনেক দর্শনার্থীরাও আসছেন প্রতিনিয়ত।

ফেসবুকে মিন্টু আহমেদের বাগানের কথা জেনে সেটি দেখতে এসেছেন প্রকৃতিপ্রেমী রাকিব আল রিয়াদ। তিনি ঢাকা পোস্টকে বলেন, মিন্টু আহমেদের এই বাগানের কথা বেশ কিছুদিন ধরেই শুনছি, সেই সঙ্গে ফেসবুকে দেখেছি। আজ চলে আসলাম সেটি দেখার জন্য, বেশ ভালো লাগলো।

প্রতিবেশী জহিরুল ইসলাম বলেন, কমবেশি প্রতিদিন দেখি মিন্টু ভাইয়ের বাসায় লোকজন আসেন তার বাগানটি দেখার জন্য। আসলে অনেক ভালো একটি কাজ তিনি করেছেন। দীর্ঘদিন ধরেই দেখে আসছি তিনি অনেক পরিশ্রম করে এই বাগানটি করছেন।

মিন্টু আহমদ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছোট থেকেই আমার গাছের প্রতি ভালোবাসা কাজ করে। অনেক ভালো লাগে যেকোনো গাছ। সেটি ফলের হোক আর ফুলের কিংবা সবজির হোক না কেন। এই ভালো লাগা থেকেই আমার এই বাগান। শহরের মধ্যে বাগান করার মতো ভালো কোনো পরিবেশ হয়তো নেই। তাই আমি আমার বাসার ছাদের উপরেই করেছি।

তিনি আরও বলেন, আমি ইউটিউবে দেখতাম অনেকে ছাদে বাগান করেছে। এছাড়া আমি বিভিন্ন দেশে ঘুরতে যেতাম সেখানেও এই বিষয়টি নজরে পড়ে। এই থেকেই ধীরে ধীরে আমার এই বাগান শুরু করা। আমি প্রথম অবস্থায় তিনটি গাছ নিয়ে এই বাগানের শুরু করেছিলাম। একটি লেবু গাছ, একটি আম গাছ ও একটি মাল্টা গাছ। এরপর যখন দেখি ফলন অনেক ভালো হচ্ছে তখন আমি আরও ফলের চারা নিয়ে আসা শুরু করি।

মিন্টু আহমদ বলেন, আমার মতে যাদের বাসার ছাদ আছে তারা সকলেই এমন ছাদ বাগান করতে পারে। কেননা এটি যেমন ছাদের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে ঠিক তেমনি পরিবেশ ভারসাম্য রক্ষা করে।

ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপপরিচালক আবু হোসেন বলেন, মিন্টু আহমেদ তার বাসার ছাদে বিভিন্ন ফল গাছের চারা দিয়ে অসাধারণ একটি বাগান করেছে। আমার মতে তিনি একজন শৌখিন বাগানি।

এমএসআর