ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী সাজিদ আব্দুল্লাহর রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। তাকে হত্যার পর শাহ আজিজুর রহমান হলের পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন ইবি শিক্ষার্থীরা। ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার (১৮ জুলাই) দুপুর ১২টার দিকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে লাশবাহী অ্যাম্বুল্যান্স আটকে এ ঘটনার সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্ত ও জড়িতদের শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা। 

এর আগে বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকাল ৫টার দিকে সাজিদের মরদেহ পুকুর ভাসতে দেখা যায়। ইবি শিক্ষার্থী ও প্রশাসনের কাছে থেকে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানার পুলিশ। এরপর তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠান পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে শুক্রবার সকালে তার মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। 

নিহত সাজিদ আব্দুল্লাহ (২৫) টাঙ্গাইল জেলার বাসিন্দা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি টাঙ্গাইলে।

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের আল হাদীস বিভাগের ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র ইনসান ইমাম বলেন, আমার ভাই মরল কেন? আমার ভাইয়ের লাশ নিয়ে এতো তালবাহানা কেন? আমার ভাইয়ের মৃত্যুর তদন্ত নিয়ে এতো তালবাহানা কেন? আমরা লাশ নিয়ে যেতে দেব না। আমার ওপর দিয়ে আমার ভাইয়ের লাশ নিয়ে যান। আমার ভাই মরে নাই, আমার ভাইকে মারা হয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু নিরপেক্ষ তদন্ত করতে হবে। এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। আমরা বিচার চাই।  

ইবি শিক্ষার্থীরা জানান, সাজিদের মৃত্যুর ঘটনাটি রহস্যজনক। পানিতে ডুবে তার মৃত্যু হতে পারে না। তাকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার পর তার লাশ পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনার তদন্ত নিয়ে পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন গড়িমসি করেছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক। এ ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। 

নিহত শিক্ষার্থীর বাবা আহসান উল্লাহ বলেন, আমার ছেলের মৃত্যুর ঘটনাটি তদন্ত করে বের করার দাবি জানাচ্ছি। তার মৃত্যু আমরা মানতে পারছি না। তাকে যদি হত্যা করা হয়। তাহলে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়া হোক। 

জানা যায়, দুপুর ১টার দিকে অনেকে একটি মরদেহ পুকুরের মাঝে ভেসে উঠতে দেখেন। তবে এটিকে আবর্জনার স্তূপ মনে করে তারা গুরুত্ব দেননি। পরে বিকেল ৫টার দিকে মরদেহটি পাড়ের কাছাকাছি এলে শিক্ষার্থীরা জড়ো হন। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডি পুলিশকে জানায়। বিকেল সাড়ে ৬টার দিকে পুলিশ সদস্যরা স্থানীয়দের সহযোগিতায় মরদেহটি উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। 

পুকুর থেকে ইবি শিক্ষার্থীর মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মেহেদী হাসান, খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। মরদেহের শরীরে আঘাতের চিহ্ন নেই। এ ঘটনায় ইউডি মামলা করা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন হাতে পেলে মৃত্যুর কারণ জানা যাবে। 

রাজু আহমেদ/আরকে