বিভাগে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হটস্পট এখন রাজশাহী। গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগের আট জেলায় ৬৮২ জনের করোনা ধরা পড়েছে। এর মধ্যে ৩৩৯ জনই রাজশাহীর বাসিন্দা। এ পর্যন্ত বিভাগে করোনা সংক্রমণ দাঁড়িয়েছে ৪১ হাজার ২৪২ জনে।

এদিকে, গত এক দিনে বিভাগে ১০ জনের প্রাণ নিয়েছে করোনা। এর মধ্যে ৫ জনই রাজশাহীর বাসিন্দা। এর বাইরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও জয়পুরহাটে দুজন করে এবং নাটোরে একজন প্রাণ হারিয়েছেন করোনায়। এ নিয়ে বিভাগে করোনায় মৃত্যু দাঁড়াল ৬৩৩ জনে।

গত ঈদের পর করোনার হটস্পট ছিল পশ্চিমের জেলা চাঁপাইনবাবগঞ্জ। সম্প্রতি ১৪ দিনের সর্বাত্মক লকডাউনে সেখানে কমেছে সংক্রমণের হার। লকডাউন শেষে সীমন্তবর্তী চাঁপাইনবাবগঞ্জে এখন চলছে বিশেষ বিধিনিষেধ। 

কিন্তু আম বাণিজ্যের কারণেই কঠোর লকডাউনে যেতে পারেনি রাজশাহীর জেলা প্রশাসন। তবে দফায় দফায় বাড়ানো হয়েছে বিধিনিষেধ। কিন্তু এর সুফল মেলেনি। 

সংক্রমণের গতি উপরের দিকে থাকায় শুধুমাত্র রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় লকডাউনের ঘোষণা আসল। শুক্রবার (১১ জুন) বিকেল ৫টা থেকে শুরু হচ্ছে সাত দিনের সর্বাত্মক লকডাউন। 

লকডাউন ঘোষণার দিন বৃহস্পতিবার (১০ জুন) রাজশাহীতে ৩৫৩ জনের করোনা ধরা পড়ে। এর আগে ৯ জুন ৩৫ জন, ৮ জুন ২৯৯, ৭ জুন ২৭০, ৬ জুন ২২২, ৫ জুন ২৮৮, ৪ জুন  ৩৭২, ৩ জুন ৩৭৮, ২ জুন ৪২৭, ১ জুন ৩৮২ এবং ৩১ মে ৩০০ জনের করোনা ধরা পড়েছে রাজশাহীতেই।

বিষয়টা উদ্বেগের বলে জানিয়েছেন রাজশাহীর সিভিল সার্জন কাইয়ুম তালুকদার। তিনি জানান, প্রকোপ দেখে মনে হচ্ছে সামাজিক সংক্রমণ হচ্ছে। যেহেতু সীমান্ত এলাকায় স্বাস্থ্য অধিদফতর ভারতীয় ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের ৮০ ভাগ উপস্থিতি পেয়েছে, সে হিসেবে ধারণা করা যায় রাজশাহীতেও ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের উপস্থিতি রয়েছে।

এদিকে, বিভাগীয় স্বাস্থ্য দফতরের সহকারী পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. নাসিমা আক্তার শুক্রবার দুপুরের জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বিভাগজুড় যে ৬৮২ জনের করোনা ধরা পড়েছে তার মধ্যে রাজশাহীর ৩৩৯, নাটোরে ৮২, জয়পুরহাটে ৭২, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৬৮, নওগাঁয় ৬৪, বগুড়ায় ২৩, সিরাজগঞ্জে ১৯ এবং পাবনায় ১৫ জন।

এ পর্যন্ত বিভাগজুড়ে আট জেলায় যে ৬৩৩ জন করোনায় মারা গেছেন তার মধ্যে সর্বোচ্চ ৩২৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন বগুড়ায়। এছাড়া রাজশাহীতে ১০৩ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জে ৬৪, নওগাঁয় ৪৯, নাটোরে ৩২, সিরাজগঞ্জে ২৫, পাবনায় ২২ এবং জয়পুরহাটে ১৪ জন প্রাণ হারিয়েছেন। 

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এমএসআর