রংপুর নগরীর জাহাজ কোম্পানির মোড় থেকে মাহিগঞ্জ সাতমাথা পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার সড়কজুড়ে সৃষ্টি হয়েছে অসংখ্য ছোট-বড় গর্ত। উঠে গেছে কার্পেটিং, কোথাও কোথাও খোয়া পর্যন্ত বের হয়ে এসেছে। দীর্ঘদিন ধরে খানাখন্দে ভরা সড়কটির সংস্কার না হওয়ায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন এলাকাবাসী। এমন পরিস্থিতির প্রতিবাদে ভাঙাচোরা এ সড়কে ধানের চারা রোপণ করেছেন স্থানীয়রা।

শুক্রবার (২৫ জুলাই) বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে নগরীর সাতমাথা রেলগেট এলাকায় চারা রোপণ কর্মসূচিতে অংশ নেন স্থানীয়রা। এসময় তারা রংপুর সিটি কর্পোরেশনকে (রসিক) ‘লাল কার্ড’ প্রদর্শন করেন।

কর্মসূচিতে অংশ নেন আসিফ মাহমুদ, মোহাম্মদ প্রান্ত, ছিয়াম হোসেন সাকিব, হাসান আলী, হোসেন আলী, সুমন হোসেন বিজয়, আরাফাত হোসেন, সাগর হাসান,  হীরা হক, সেলিম হোসেন, হীরা, মোস্তাফিজার রহমানসহ স্থানীয় অনেকে। এর আগে গত ২০ জুলাই প্রতীকী প্রতিবাদ কর্মসূচি হিসেবে সিটি কর্পোরেশনকে 'মৃত' ঘোষণা করে গায়েবানা জানাজা করেন স্থানীয়রা।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, প্রশস্ত এই সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিং উঠে গিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বড় বড় গর্ত। কোথাও কোথাও গর্তে জমে থাকা পানি দুর্ঘটনার আশঙ্কা তৈরি করছে। আবার কোথাও ধুলার ঝড় অসহনীয় হয়ে উঠেছে। রিকশা, অটোরিকশা ও ভ্যানচালকরা বলছেন, প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে, আর যানবাহনের যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে বারবার।

এলাকাবাসীরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে এই সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছে এই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী হাজারো মানুষ। প্রতিদিনই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ। অনেকবার অভিযোগ করেও কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়নি সিটি কর্পোরেশন। সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও রংপুর বিভাগীয় কমিশনার শহীদুল ইসলাম ও প্রধান নির্বাহী উম্মে ফাতিমাকে অযোগ্য ঘোষণা করে তাদের প্রতি লাল কার্ড প্রদর্শন করেন।

স্থানীয় বাসিন্দা রাজিমুজ্জামান হৃদয় বলেন, দীর্ঘদিন থেকে বেহাল এ সড়ক সংস্কারের দাবিতে সিটি কর্পোরেশনকে মৃত ঘোষণা করে প্রথমে প্রতীকী জানাজা করেছি। বৃষ্টির পানি জমে এ রাস্তায় কাঁদা তৈরি হয়েছে।ভয়াবহ অবস্থা বোঝাতে ভাঙা সড়কে ধান গাছ রোপণ করেছি, সিটি কর্পোরেশনকে লাল কার্ড প্রদর্শন করা হয়েছে। 

আরাফাত হোসেন নামে একজন বলেন, সিটি কর্পোরেশন এলাকায় এমন বেহাল একটি সড়ক থাকতে পারে কেউ কল্পনা করতে পারবে না। দীর্ঘদিন থেকে হাজার হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়লেও কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করে তোলা না হলে কঠোর আন্দোলন করা হবে।

রংপুর সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উম্মে ফাতিমা জানান, সড়কের ছোট-বড় গর্ত সংস্কারের কাজ আগামী সপ্তাহ থেকেই শুরু হবে। 

তিনি আরও বলে জানান, পুরো সিটি এলাকায় প্রায় ৩০০ কিলোমিটার পাকা সড়ক ভাঙাচোরা হয়ে গেছে। এজন্য ২১০ কোটি ৬৭ লাখ টাকার একটি প্রকল্প স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এমএএস