ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের রাজনীতিতে জড়িত দুই ঠিকাদার পাবনা সদর থানায় তাদের বৈধ অস্ত্র জমা দিয়েছেন। তবে, আলোচিত এ ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লেও গণপূর্ত বিভাগের কোনো অভিযোগ না থাকায় মামলা হয়নি। রোববার (১৩ জুন) সন্ধ্যায় পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

ভিডিওতে দেখা যায়, গত ৬ জুন দুপুর ১২টার দিকে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ফারুক হোসেন ওরফে হাজী ফারুক জামার হাতা গুঁটিয়ে সদলবলে গণপূর্ত ভবনে ঢুকছেন।

তার পেছনে শটগান হাতে পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এআরখান মামুন এবং জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য শেখ লালু। অস্ত্র নিয়েই তাদের কার্যালয়ের বিভিন্ন কক্ষে ঢুকতে দেখা গেছে। ওই সময় তাদের সঙ্গীরা বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন। পরে দুপুর ১২টা ১২ মিনিটে তারা ফিরে যান।

এই প্রসঙ্গ টেনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাসুদ আলম বলেন, ঘটনাটি প্রকাশ পাওয়ার পরে অস্ত্র প্রদর্শনকারী দুই ঠিকাদার আলী রেজা খান মামুন ও শেখ লালু রোববার সকালে পাবনা সদর থানায় তাদের দুটি লাইসেন্সকৃত শটগান থানায় জমা দিয়েছেন। অস্ত্র বৈধ হলেও জমনে ভীতির সৃষ্টি হতে পারে এমনভাবে অস্ত্র প্রদর্শনের সুযোগ নেই। অস্ত্র আইনের শর্ত ভঙ্গ হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

পাবনা গণপূর্ত বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ঠিকাদাররা আমার কক্ষে এসেছিলেন। আমার টেবিলে অস্ত্র রেখে নির্বাহী প্রকৌশলী স্যারের কাছে এসেছেন বলে জানান তারা। খারাপ আচরণ বা গালাগালি করেননি।

পাবনা গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আনোয়ারুল আজিম বলেন, ঘটনার সময় আমি অফিসের বাইরে ছিলাম। তবে সিসিটিভি ফুটেজে অস্ত্র হাতে অনেকে এসেছে দেখেছি। তারা আমাকে সরাসরি বা ফোনে কোনো হুমকি দেয়নি। কথাও হয়নি। তাই আমরা লিখিত অভিযোগ করিনি।

আলী রেজা খান মামুন বলেন, আমাদের সঙ্গে নগদ টাকা ছিল। ফলে নিজেদের নিরাপত্তার জন্য আমরা সঙ্গে অস্ত্র রেখেছিলাম। আমাদের ভুল হয়েছে সরকারি অফিসে প্রবেশ করা। কিন্তু কোনো ধরনের অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা সেখানে যাইনি। একটি মহল ঘটনাকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করছে।

সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক ফারুক হোসেন বলেন, আমি গণপূর্ত বিভাগের ঠিকাদার নই। বিল সংক্রান্ত বিষয়ে কথা বলতে মামুন ও লালু আমাকে সেখানে নিয়ে গিয়েছিল। তবে এভাবে যাওয়া আমাদের উচিত হয়নি। 

পাবনার পুলিশ সুপার মহিবুল ইসলাম খান জানান, বিষয়টি নিয়ে গণপূর্ত বিভাগ অভিযোগ না করায় কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যায়নি। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে তদন্ত করা হচ্ছে। সদর থানার ওসিকে লাইসেন্স বাতিলের বিষয়ে লেখতে বলা হয়েছে। পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার হবে বলে জানান এসপি।

রাকিব হাসনাত/এমএসআর