যুবদল নেতাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীর মামলা
যশোরে যুবদল নেতার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগে সংবাদ সম্মেলনের পর এবার আদালতে মামলা হয়েছে। সোমবার শহরের বারান্দীপাড়া ঢাকা রোড এলাকার পুলিশ কর্মকর্তা আজিজুল হক সবুজের স্ত্রী জেসমিন বেগম এই মামলাটি করেছেন।
মামলায় যশোর পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি তারেক হাসান চুন্নাসহ ১২ জনকে আসামি করা হয়েছে। বিচারক সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রহমত আলী মামলাটি আমলে নিয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশের ওসিকে নিয়মিত মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিজ্ঞাপন
মামলার অপর আসামিরা হলেন, বারান্দীপাড়া বৌবাজার এলাকার আনসার আলীর ছেলে বিশাল হোসেন, লাল্টুর ছেলে আকাশ হোসেন, লাল্টু, আশরাফ আলীর ছেলে সোহেল ওরফে চাকু সোহেল, শরিফ, আশরাফের ছেলে হাসান, সানু, মন্ডল, সিরাজের ছেলে হাবিবুর রহমান হাবিব, জামালের ছেলে তুষার, রবির ছেলে আল আমিন ওরফে ভাগিনা আলামিন।
বাদী মামলায় বলেছেন, তার চারটি ইজিবাইক রয়েছে। যা ভাড়া দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। গত ৫ আগস্টের পর থেকে ১নং ওয়ার্ড যুবদলের সভাপতি বারান্দীপাড়া বৌ বাজার এলাকার তারেক হাসান চুন্না তার কাছে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। না দেওয়ায় হত্যাসহ নানা ধরনের হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছিলেন। গত ৪ আগস্ট বিকেলে যুবদল নেতা তারেক হাসান চুন্নাসহ অন্য আসামিরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে জেসমিনের বাড়িতে হামলা চালায়।
বিজ্ঞাপন
এ সময় জেসমিনের ঘরে ঢুকে দুই লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। চাঁদার টাকা না দেওয়ায় তাকে বেধড়ক মারধর করে এবং আসামি সানু ও লাল্টু জেসমিনের শ্লীলতাহানি ঘটায়। এ সময় চুন্না ঘর তল্লাশি করে ৫০ হাজার টাকা ও একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নেয়। জেসমিনের ২০ বছরের ছেলে রাকিব হাসানকে মারধর করে আহত করে এবং ১১ মাস বয়সী শিশুর গলায় চাকু ধরে অবশিষ্ট টাকা দিতে বলে। এ সময় জেসমিনের পরিবারের ডাক চিৎকারে স্থানীয়রা ছুটে এলে অনেকে পালিয়ে গেলেও চুন্নাসহ কয়েকজনকে হাতে-নাতে ধরে ফেলে স্থানীয়রা। পরে আরও কিছু দুর্বৃত্ত এসে চাকুর ভয় দেখিয়ে চুন্নাকে ছাড়িয়ে নেয়। এছাড়া এই ঘটনাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করে।
পরে জেসমিন জাতীয় সেবা ৯৯৯-এ কল করলে পুলিশ এসে তাদের ওই সন্ত্রাসীদের হাত থেকে উদ্ধার করে। পাশাপাশি সেনাবাহিনীর সহযোগিতায় ছিনিয়ে নেওয়া মোবাইলটি উদ্ধার করা হয়। এখনও বাকি দেড় লাখ টাকার জন্য নানা ধরনের হুমকি দিচ্ছে বলে বাদী মামলায় উল্লেখ করেছেন।
প্রসঙ্গত, রোববার দুপুরে একই অভিযোগ এনে প্রেসক্লাব যশোরে সংবাদ সম্মেলন করেন জেসমিন। তিন ঘণ্টার মধ্যেই চুন্নার পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন নগর যুবদলের সদস্য সচিব শেখ রবিউল ইসলাম রবি। এ সময় অভিযোগ করা হয়, ইজিবাইক সংক্রান্ত বিষয়ে চুন্নাকে সালিসের জন্য ডেকে নেয় জেসমিন। কিন্তু সালিস জেসমিনের পছন্দ না হওয়ায় চুন্নাকে মারপিট করে জেসমিনের লোকজন। এছাড়া চাঁদাবাজির অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন চুন্না।
রেজওয়ান বাপ্পী/এমএএস