কুমিল্লার তিতাসে শিশু সায়মন ওরফে আরিয়ান হত্যার দায়ে বিল্লাল পাঠান(৪২) নামের এক যুবকের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে ঘটনায় জড়িত বিল্লাল পাঠানের শ্যালিকা শেফালী আক্তারের (৪০) যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

পাশাপাশি দণ্ডপ্রাপ্ত বিল্লাল পাঠানের ১ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ১ বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং শেফালী আক্তারের ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড অনাদায়ে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বুধবার (২০ আগস্ট) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক সাব্বির মাহমুদ চৌধুরী এ রায় দেন।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বিল্লাল পাঠান তিতাস উপজেলার বিরামকান্দি পাঠান বাড়ির খেলু পাঠানের ছেলে এবং যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি শেফালী আক্তার (৪৩) একই উপজেলার কলাকান্দি উত্তরপাড়া মাষ্টার বাড়ির জামাল মিয়ার স্ত্রী। সে বিল্লাল পাঠানের স্ত্রীর বড় বোন।

কুমিল্লার অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট ইকরাম হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তার বরাত দিয়ে জানা গেছে, বিল্লাল পাঠানের সঙ্গে তার স্ত্রীর বড় বোন শেফালীর পরকীয়ার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। দু’জন মাঝেমধ্যেই শারীরিক সম্পর্কে লিপ্ত হতেন। সেই সূত্র ধরে ২০২৩ সালের ১৮ আগস্ট বিকেলে শেফালীর ঘরে অপ্রীতিকর অবস্থায় তাদের দেখে ফেলে ৭ বছরের শিশু সায়মন ওরফে আরিয়ান। এসময় শ্বাসরোধ করে হত্যা করেন তারা। পরে আরিয়ানের মরদেহ বস্তায় ভরে পাশের একটি কাশবনের বালুতে পুঁতে রাখেন।

ঘটনার পর শিশু আরিয়ানকে কোথাও খুঁজে না পেয়ে তিতাস থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন আরিয়ানের মা। পরদিন ঘটনাস্থল থেকে বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয় তার। এ ঘটনায় আরিয়ানের মা মোর্শেদা আক্তার বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটি প্রথমে তিতাস থানা পুলিশ এবং পরে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তদন্ত করে।

জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) জীবন বিশ্বাস তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় শেফালী আক্তারকে গ্রেপ্তার করেন ওই বছরের ২২ আগস্ট। এরপর একই বছরের ৩১ ডিসেম্বর বিল্লাল পাঠানকে গ্রেপ্তার করা হলে ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দেন।

তদন্ত কর্মকর্তা জীবন বিশ্বাস ২০২৪ সালের ৮ অক্টোবর আসামি বিল্লাল পাঠান ও শেফালী আক্তারকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। পরে মামলাটি বিচারে এলে চলতি বছরে ২৭ ফেব্রুয়ারি তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় চার্জ গঠনক্রমে রাষ্ট্র পক্ষে ১৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য নেওয়া শেষে যুক্তিতর্ক শুনানির মাধ্যমে দোষী সাব্যস্ত করে আজ (বুধবার) এই রায় দেন আদালত।

আরিফ আজগর/বিআরইউ