জনতা ব্যাংক ম্যানেজার মো. আইয়ুব আলী

মাদারীপুর সদর উপজেলার মস্তফাপুর শাখা জনতা ব্যাংক ম্যানেজারের বিরুদ্ধে এক গ্রাহকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করার অভিযোগ উঠেছে। ১০ মাসেও চেক বই না পেয়ে ওই গ্রাহক রাগান্নিত হন ব্যাংক ম্যানেজারের সঙ্গে। এতে গ্রাহককে হুমকি দিয়ে ব্যাংক ম্যানেজার বলেন, ‘আপনি আমাকে চেনেন? আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর লোক।’

মো. আইয়ুব আলীর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ করেন মাদারীপুর সদর উপজেলা মস্তফাপুর এলাকার বাসিন্দা ইলিয়াস হাওলাদার। তিনি হাওলাদার কনস্ট্রাকশনের মালিক এবং প্রতিষ্ঠিত ঠিকাদার।

অভিযোগমতে, ইলিয়াস হাওলাদার গত বছরের ১২ আগস্ট তার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হাওলাদার কনস্ট্রাকশনের নামে চেক বই পাওয়ার জন্য আবেদন করেন। কিছুদিন পর সে সময়ের ব্যাংক ম্যানেজার পরিবর্তন হয়ে যান। পরে আইয়ুব আলী নতুন ম্যানেজার হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর ইলিয়াস ব্যাংকে চেক বই আনতে যান।

তখন ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তাকে জানায়, আপনার চেক বই প্রাপ্তি আবেদন ফরমটি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, পুনরায় আবেদন করুন। চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারি পুনরায় আবেদন করেন তিনি। এরপর থেকে বেশ কয়েকবার ব্যাংকে গিয়েও চেক বই পাননি ইলিয়াস।

সর্বশেষ ৮ জুন ইলিয়াস ব্যাংকে যান চেক বই নিতে। তখন বর্তমান ব্যাংক ম্যানেজার ইলিয়াসের ওপর ক্ষিপ্ত হন বারবার চেক বই নিতে আসার জন্য। তখন ইলিয়াসও রাগান্বিত হলে তাদের মাঝে তর্কবিতর্ক হয়।

এ সময় ব্যাংক ম্যানেজার ইলিয়াস হাওলাদারকে বলেন, ‘আপনার মতো গ্রাহক আমাদের দরকার নেই। আপনাকে চেক বই দেব না, আপনি আপনার অ্যাকাউন্ট ক্লোজ করেন। আমি ব্যাংক ম্যানেজারের চাকরি করি দেখে আমাকে কী মনে করেছেন আপনি। আপনি আমাকে চেনেন? আমি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর লোক।’

ইলিয়াস হাওলাদার ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি প্রায় ১০ মাস ধরে চেক বই পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছি। চেক বইটি আমার জন্য খুবই জরুরি। বারবার চেক বইয়ের খোঁজ নিতে গেলে ব্যাংক ম্যানেজার আমার সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। তিনি বলেন, আপনার যদি বেশি জরুরি হয় তাহলে আপনি অন্য ব্যাংকে গিয়ে অ্যাকাউন্ট খোলেন। আমাদের ঠিকাদার প্রয়োজন নেই। তখন আমি কিছুটা রাগান্বিত হলে তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর লোক বলে ভয় দেখান।

এ বিষয়ে ম্যানেজার মো. আইয়ুব আলী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমরা চেক বই পাওয়ার আবেদন ঢাকায় পাঠিয়েছি। তার একটা কপি আমরা তাকে দিয়েছি। তারপরও তিনি অফিসে আসার পর আমরা সঙ্গে খারাপ আচরণ করেন। আমাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন। আমাকে তিনি বলেন, আপনি ব্যাংকের নিচে আসেন, দেখিয়ে দেব আমি কে? তখন আমি তাকে বলেছি আমিও স্বাস্থ্যমন্ত্রীর লোক।

জনতা ব্যাংকের মাদারীপুর জেলা উপমহাব্যবস্থাপক আলী আহম্মেদ খান ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি বিষয়টিতে অবগত আছি। এমআইসি চেক পেতে সময়  লাগে। তা ছাড়া হেড অফিস যদি চেক না দেয়, তাহলে আমাদের কিছু করার থাকে না। তা ছাড়া আমি দুদিন ছুটিতে আছি। বৃহস্পতিবার ব্যাংকে গিয়ে আমি বিষয়টি দেখব।

তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রীর লোক কি না, জানতে চাইলে উপমহাব্যবস্থাপক বলেন, কারও সঙ্গে তার ব্যক্তিগত সম্পর্ক থাকতে পারে। তবে এ ব্যাপারে আমি কিছু জানি না।

নাজমুল মোড়ল/এনএ