রংপুরের কাউনিয়ায় সংঘটিত মাসুদার হত্যা মামলায় পালিয়ে থাকা প্রধান আসামিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব ও পুলিশ। তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আসামিদের অবস্থান শনাক্ত করে তাদেরকে খুলনা ও গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের নাজিরদহ গ্রামের আব্দুল লতিফ মিয়া (৬৫), দুই ছেলে সাইফুল ইসলাম (৩৫), শহিদুল ইসলাম (২৬), মেয়ে লাইলী বেগম (২৮) ও জামাই সাধু কুটিরপাড়ার আব্দুল হাকিম (২৮)।

শুক্রবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে কাউনিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ শাহ গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আসামিদের বৃহস্পতিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও মামলা সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার হারাগাছ ইউনিয়নের নাজিরদহ বকুলতলার মাসুদার রহমানের সঙ্গে তার আপন চাচা আব্দুল লতিফের জমিজমা নিয়ে বিরোধ ছিল। বিরোধপূর্ণ জমির বিষয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন রয়েছে। গত ১৮ জুলাই শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে নাজিরদহ একতাব্রিজ এলাকায় যান মাসুদার। সেখানে দেখতে পান বিরোধপূর্ণ জমির উপর প্রতিপক্ষ চাচা লতিফ ঘর নির্মাণ করছেন। মাসুদার এর প্রতিবাদ করলে তাকে মারপিট করেন লতিফ তার ছেলে-মেয়ে ও জামাইসহ অন্য সদস্যরা। একপর্যায়ে লতিফের ছেলে সাইফুল তার হাতে থাকা ধারালো অস্ত্র (হাচুয়া) দিয়ে মাসুদারের ঘাড়ে কোপ দেয়। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে মাসুদার মাটিতে পড়ে যান। স্বজনরা আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মাসুম মিয়া বাদী হয়ে ১১ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের মাঠে নামে পুলিশ। কিন্তু ঘটনার পর পরই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামিরা এলাকা থেকে অন্যত্র পালিয়ে যান।

র‌্যাব-১৩-এর সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিপ্লব কুমার গোস্বামী বলেন, আলোচিত এ হত্যাকাণ্ডের আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ ও র‌্যাব তৎপর হয়ে উঠে। এরই মধ্যে গত বুধবার তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আসামিদের অবস্থান নিশ্চিত হয়ে যৌথ অভিযান পরিচালনা করে র‌্যাব-১৩ ও র‌্যাব-১। অভিযানে গাজীপুরের কালিয়াকৈর থানাধীন হরতকিতলা চন্দ্রা, নবীনগর ও চন্দ্রা ফ্লাইওভার এলাকা থেকে মামলার এক নম্বর আসামি আব্দুল লতিফ মিয়া, চার নম্বর আসামি শহিদুল ইসলাম, আট নম্বর আসামি লাইলী বেগম ও ১০ নম্বর আসামি আব্দুল হাকিমকে গ্রেপ্তার করে।

একই দিনে আরেকটি পৃথক অভিযানে খুলনার বাগেরহাট থেকে মামলার দুই নম্বর আসামি সাইফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১৩ ও র‌্যাব-৬-এর অভিযানিক দল।

কাউনিয়া থানা-পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ শাহ বলেন, গ্রেপ্তার পাঁচজনই মাসুদার হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। ঘটনার পর থেকে তারা গ্রেপ্তার এড়াতে পালিয়ে ছিলেন। যৌথ অভিযানে তাদের গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামিদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এএমকে