ঠাকুরগাঁওয়ে বিএনপির সমাবেশস্থল তৈরি করতে সাত হাজার বাঁশ লেগেছে
প্রায় আট বছর পর ঢাক-ঢোল পিটিয়ে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ৪০ জন শ্রমিক দিন-রাত কাজ করে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় বড় মাঠে সম্মেলনের সমাবেশস্থল তৈরি করেছে।
পুরো সমাবেশস্থল তৈরি করতে প্রায় ৭ হাজার বাঁশ ব্যবহার করা হয়েছে। এছাড়া সাড়ে তিন হাজার টিনও লেগেছে। সবাবেশস্থলে ৫ হাজার নেতাকর্মীর বসার জন্য চেয়ারের ব্যবস্থা ছিল। পুরো সমাবেশস্থলটি তৈরি করেছে দিনাজপুরের মনতাজ ডেকোরেটর।
বিজ্ঞাপন
আট বছর পর বিএনপির সম্মেলন ঘিরে গত কয়েক দিনে পুরো শহর সেজেছিল বর্ণিল সাজে। নেতাদের ছবি, ব্যানার, ফেস্টুন আর বিলবোর্ডে ছেয়ে গেছে শহরের অলিগলি। তবে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির ইতিহাসের প্রথম এতো বড় সম্মেলনের আয়োজন ছিল দেখার মতো।
গত সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে ঠাকুরগাঁও সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় বড় মাঠে দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ভাইস চেয়ারম্যান সামসুজ্জামান দুদুসহ কেন্দ্রীয় নেতাদের উপস্থিতিতে এ ফলাফল ঘোষণা করেন নির্বাচন কমিশন অ্যাডভোকেট বদিউজ্জামান চৌধুরী।
বিজ্ঞাপন
সমাবেশে সভাপতি পদে অন্য কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় সাবেক পৌর মেয়র ও দলটির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বীতায় নির্বাচিত হয়েছেন। সম্মেলনে কাউন্সিলদের ভোটদানের মধ্য দিয়ে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক মো. পয়গাম আলী।
সমাবেশস্থল তৈরির কাজে নিয়োজিত শ্রমিক মনজুরুল ইসলাম ও রফিকুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে জানান, দিনাজপুরের মনতাজ ডেকোরেটরের পক্ষে থেকে আমরা ৪০ জন শ্রমিক গত মাসের ৩১ আগস্ট থেকে রাত-দিন এক করে কাজ করে মাত্র ৮ দিনেই সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে পেয়েছি। বড় আয়োজন করার মতো উত্তরবঙ্গে দিনাজপুরের মনতাজ ডেকোরেটর ছাড়া আর কেউ নাই। আমরা যদি কোনো কাজে ফেইল করি তাহলে ঢাকা ছাড়া উপায় নেই। তবে আমরা এককভাবে কাজ করেছি তা নয়, সাউন্ড সিস্টেম ও লাইটিং'র কাজ করেছে অন্যজন। আমরা তাদের সাহায্য করেছি।
ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপির সাবেক দপ্তর সম্পাদক মামুন উর রশিদ ঢাকা পোস্টকে জানায়, দীর্ঘ আট বছর পর গতকাল সোমবার আমাদের জেলা সম্মেলন সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে। ঠাকুরগাঁওয়ের ইতিহাসে এতো সুন্দর, এতো সুশৃংখল সম্মেলন এর আগে লক্ষ্য করা যায়নি। এই সম্মেলন ঘিরে পুরো জেলায় একটি আমেজ চলছিল, অনেক সাজ সজ্জাও হয়েছে। আমাদের শহরটা সাজানোর জন্য অনেক ফেস্টুন-ব্যানার, মরিচ বাতি দিয়ে রঙিনভাবে সাজানো হয়েছিল।
এতো বড় আয়োজন করতে কত টাকা ব্যয় হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মূলত এটার খরচের হিসাব দেওয়া বর্তমানে খুবই কঠিক। কারণ এটার আলাদা আলাদা সাব-কমিটি গঠন করে হয়েছে। সাব-কমিটিগুলো নিজ নিজভাবে খরচ করেছেন। এখনো সেই হিসাব একত্র করা হয়নি।
তিনি আরও বলেন, বাইরে থেকে দেখে মনে হতে পারে বিএনপির সম্মেলনে অনেক খরচ হয়েছে। মূলত অনেকেই নিজ উদ্যোগে গেট করে দিয়েছেন। কেউ আবার ব্যানার-ফেস্টুন ও মরিচবাতির খরচ দিয়েছে। আবার যারা মনোনয়ন প্রত্যাশী আছেন তারাও কিছু সাজ-সজ্জার কাজ করেছেন। বাস্তবে এটার বড় ধরনের খরচ মনে হতে পারে কিন্তু তা না। খুবই অল্প খরচে এটা হয়েছে। তবে সকল হিসাবে হাতে পেলেই বলা যাবে আসলেই কত টাকা ব্যয় হয়েছে এই সম্মেলনকে ঘিরে।
নির্বাচন কমিশনের দেয়া তথ্য মতে, সম্মেলনে ১১ জন প্রার্থী মনোনয়নপত্র নিয়েছিলেন। এর মধ্যে ৭ জন প্রার্থী মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছেন। সবশেষ সভাপতি পদে ছিলেন ১ জন ও সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৩ জন প্রার্থী। এছাড়া সম্মেলনে কাউন্সিলর ছিলেন ৮০৮ জন।
রেদওয়ান মিলন/এমএএস