জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেছেন, রাজাকার ট্যাগিং বাংলাদেশে আর চলবে না। কারণ এই রাজাকার ট্যাগিং ও নাতিপুতির রাজনীতির কারণে অনেককে ভারতে পালাতে হয়েছে। আর যারা নির্বাচনের আগে রাজাকার ট্যাগিং ব্যবহার করে পাস করতে চেয়েছে, তারা এখন নির্বাচন বয়কট করা শুরু করেছে। এজন্য ট্যাগিংয়ের রাজনীতি, রাজনীতির নামে ট্যাগিং, রাজনীতির নামে বাসি স্লোগান— সবই বাংলাদেশে এখন অচল।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর রংপুর মডেল কলেজের হলরুমে জামায়াতের রংপুর মহানগর ও জেলা শাখার উদ্যোগে রংপুর-৩ আসনের নির্বাচনী দায়িত্বশীলদের নিয়ে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আবদুল হালিম বলেন, বাংলাদেশের তরুণরা এখন একটি বৈষম্যমুক্ত বাংলাদেশ চান। তারা ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র ও কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা চান। সেই বাংলাদেশ গড়ার জন্য ডা. শফিকুর রহমানের নেতৃত্বে নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে জামায়াত সব ধরনের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে। 

তিনি আরও বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে (ডাকসু) শিবির সর্বময় মিত্র চাকমাকে প্যানেলে যুক্ত করে নিরঙ্কুশ বিজয় অর্জন করেছে। এর মাধ্যমে প্রমাণিত হয়েছে, শিবির এই দেশে সকলকে সাথে নিয়েই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে চায়। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা শিবির সমর্থিত প্যানেলকে তাদের গণ রায় দিয়ে প্রমাণ করেছে তারা দুর্নীতির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে আবদুল হালিম বলেন, আমরাও আগামী ফেব্রুয়ারি মাসেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন চাই। তবে সেই নির্বাচন অবশ্যই পিআর পদ্ধতিতে হতে হবে। পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে সেখানে মনোনয়ন বাণিজ্য থাকবে না, ভোটকেন্দ্র দখলের চিন্তা থাকবে না, প্রার্থীদের একচেটিয়া প্রতিযোগিতা থাকবে না, নির্বিঘ্নে মানুষ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারবে।

জামায়াতের এই নেতা বলেন, আমরা দেখেছি, যারা অতীতে প্রতিনিয়ত নির্বাচনের দাবি করতেন, তারা এখন নির্বাচন বয়কট করা শুরু করেছেন। এটা এক ধরনের দ্বিচারিতা। মুখে ফেনা তুলে বলতেন ‘নির্বাচন দেন, নির্বাচন দেন’। আর এখন সকালবেলা ভোট দেন, দুপুরে ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখেন, আর বিকেল ৩টার সময় বলেন ‘ভোট বর্জন করলাম’। এই কালচার বাংলাদেশের মানুষ আর চায় না।

আবদুল হালিম দাবি করেন, আগামী নির্বাচনের আগেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানে নিহত আবু সাঈদসহ সকল শহীদের বিচারের জন্য ঘোষিত জুলাই সনদকে আইনি ভিত্তি দিতে হবে।

রংপুর মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির উপাধ্যক্ষ এটিএম আজম খানের সভাপতিত্বে এবং মহানগর সেক্রেটারি কে.এম. আনোয়ারুল হক কাজল ও জেলা সেক্রেটারি মাওলানা এনামুল হকের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রংপুর-৩ আসনে সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল টিম সদস্য ও রংপুর-৩ আসন পরিচালক আব্দুর রশিদ, ছাত্রশিবিরের রংপুর মহানগর শাখার সভাপতি নুরুল হুদা, জেলা শাখার সভাপতি ফিরোজ মাহমুদ আফ্রিদি প্রমুখ।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/আরএআর