চলতি মৌসুমে কুড়িগ্রামের ৯টি উপজেলায় সোনালী আঁশ পাট লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও বেশি আবাদ হয়েছে। ফলনও হয়েছে সন্তোষজনক। 

স্থানীয় কৃষি অফিস বলছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবং বন্যার প্রভাব না পড়লে এখানকার কৃষকদের লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, পাটের বৃদ্ধি খুবই ভালো দেখা যাচ্ছে। জেলায় সবচেয়ে বেশি পাটের আবাদ হয়েছে, রৌমারী, রাজিবপুর,চিলমারী ও ভুরুঙ্গামারী উপজেলায়। 

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৮ হাজার ৮শ ৮০ হেক্টর জমিতে। তবে অর্জিত হয়েছে ১৯ হাজার ৬শ ৮০ হেক্টর জমিতে। লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১ হাজার হেক্টর জমিতে পাট বেশি আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে শুধু রাজিবপুর উপজেলায় পাটের আবাদ হয়েছে, ২ হাজার ৭শ ৫০ হেক্টর জমিতে। 

পাটচাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক বিঘা জমিতে পাট বপণ করা থেকে শুরু করে পরিপক্ক হতে সময় লাগে ৩ থেকে সাড়ে ৩ মাস। ভালো ফলন হলে এক বিঘা জমিতে পাট উৎপাদন হবে ৮-১০ মণ। বর্তমানে প্রতিমণ পাট বাজারে বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৪ হাজার টাকা দরে। এক বিঘা জমিতে পাট চাষে সবমিলে ব্যয় হয় ৯-১০ হাজার টাকা। 

কুড়িগ্রাম সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের ছত্রপুর গ্রামের মাহাবুব বলেন, আমি এক বিঘা জমি বর্গা নিয়ে পাট চাষ করেছি। ফলন ভালোই দেখা যাচ্ছে। ২০-২৫ দিন পর পাট কাটতে হবে,তার আগে যদি বন্যা হয় তাহলে ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি। আশা করছি বন্যার আগে পাট কাটতে পারলে লাভ করতে পারবো।

রাজিবপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আমার উপজেলায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। বৃদ্ধি ভালো দেখা যাচ্ছে। আমরা আশা করছি কৃষকরা লাভবান হতে পারবে। এ বছর বৃষ্টিও ছিল, রোদও ছিল। তাই আবাদ ভালো হয়েছে। এই সময় যদি বন্যা চলে আসে পাট চাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ১৫-২০ পর যদি বন্যা হয় তাহলে পাট চাষের ক্ষতি হবে না, এর আগেই কৃষকরা জমি থেকে পাট কাটতে পারবে।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. মঞ্জুরুল হক বলেন, জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে, ফলনও হয়েছে ভালো।

আগাম বন্যা না হলে কৃষকরা লাভবান হতে পারবে। আর এ মাসে বন্যা হলে পাটচাষীরা ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

মো. জুয়েল রানা/এনএফ