গাজীপুর সাফারি পার্কে নীলগাইয়ের পালে জন্ম নিয়েছে নতুন দুই শাবক। দিনভর মায়ের ছায়ায় ঘুরে বেড়াচ্ছে বনজুড়ে। পাঁচ-ছয় দিন ধরে গাজীপুর সাফারি পার্কের কোর সাফারি এলাকায় বনের ভেতর তাদের দেখা মিলছে। তবে মানুষের উপস্থিতি টের পেলেই শাবকদের নিয়ে দৌড়ে বনের অন্য প্রান্তে ছুটে যাচ্ছে মা নীলগাই। 

মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) দুপুরে গাজীপুরের বাঘের বাজার এলাকায় অবস্থিত গাজীপুর সাফারি পার্কের কোর সাফারিতে তাদের দেখা গেছে। 

তবে পার্ক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ২১ অক্টোবর প্রথমবার তারা শাবক দুটি দেখতে পায়। এরপর প্রতিদিন খাবার খেতে এলে নির্দিষ্ট স্থানে তাদের দেখা মিলছে। তবে শাবক দুটি স্ত্রী না পুরুষ, তা জানা যায়নি। নিরাপত্তার কারণে কাছাকাছি গিয়ে তা নির্ধারণের চেষ্টাও করেনি কর্তৃপক্ষ।

পার্কের বন্যপ্রাণী পরিদর্শক মো. রাজু আহমেদ জানান, আগেও কয়েকবার সেখানে নীলগাই শাবক জন্ম দিয়েছে। সর্বশেষ দুটি শাবকসহ এখন নীলগাইয়ের সংখ্যা ১১টি। এর মধ্যে পূর্ণবয়স্ক ৯টি, ছয়টি পুরুষ ও তিনটি স্ত্রী নীলগাই। বর্তমানে দুটি শাবক নিয়ে মা নীলগাই নিরাপদস্থলে রয়েছে।

পার্কের বন্যপ্রাণী সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, নীলগাই সাধারণত শাবকের বিষয়ে সতর্ক থাকে। তারা শাবকের নিরাপত্তায় অনেক সময় কিছু না খেয়ে দীর্ঘ সময় তাদের নিরাপত্তা দিতে থাকে। এ জন্য এদের শাবক দেখার সুযোগ কম হয়। পার্কে সম্প্রতি জন্ম নেওয়া শাবকগুলো একটু পরিণত হওয়ায় মায়েরা তাদের নিয়ে বাইরে আসা শুরু করেছে। নীলগাই সাধারণত একসঙ্গে একটি থেকে তিনটি শাবকের জন্ম দেয়। জন্মের পর প্রায় ছয় মাস ধরে বাচ্চাগুলো দুধ পান করে। এরপর তারা মায়েদের সঙ্গে অন্যান্য খাবার খাওয়ায় অভ্যস্ত হতে থাকে। অ্যান্টিলোপ প্রজাতির মধ্যে নীলগাই সবচেয়ে বড় প্রাণী। পুরুষ নীলগাইয়ের শিং থাকে। এদের গায়ের রং হয় কিছুটা কালচে। একই প্রজাতির স্ত্রীদের ক্ষেত্রে শিং থাকে না। স্ত্রী নীলগাইয়ের রং হয় কিছুটা বাদামি। এরা প্রাপ্তবয়স্ক হয় দুই বছরে। পুরুষ প্রাপ্তবয়স্ক হতে সময় নেয় পাঁচ বছর।

গাজীপুর সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও সহকারী বন সংরক্ষক তারেক রহমান জানান, গাজীপুর সাফারি পার্কে নীলগাই নতুন শাবকের জন্ম দিয়েছে। তাছাড়াও পার্কের উন্মুক্ত ও উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত হওয়ায় নীলগাই অনেকটাই স্বস্তিতে রয়েছে। এ পরিবেশ বজায় থাকলে আরও বংশবিস্তার করবে তারা। 

আরএআর