শেরপুরে টানা বৃষ্টিতে আমন ও শীতকালীন সবজির ব্যাপক ক্ষতি
শেরপুরে টানা ভারি বৃষ্টিতে জেলার নিচু এলাকার বিস্তীর্ণ ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে আধাপাকা আমন ধান ও শীতকালীন সবজির। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তথ্যমতে, শনিবার (১ নভেম্বর) সকাল ৯টা পর্যন্ত শেরপুর সদর উপজেলায় ১৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
হঠাৎ এই অকাল বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন সদর উপজেলার চরাঞ্চল ও নিচু এলাকার কৃষকরা। অনেকের ধানক্ষেত, মরিচ, আলু, সরিষা ও মৌসুমি সবজির জমি এখন পানির নিচে।
বিজ্ঞাপন
বুইড়া এলাকার কৃষক জহুরুল ইসলাম বলেন, প্রতি বছরই কোনো না কোনোভাবে ক্ষতি হয়। এবারও বৃষ্টিতে সব শেষ। আমাদের এলাকার ধান, মরিচ, আলু সবই পানিতে ডুবে গেছে। এই ক্ষতি বলে শেষ করা যাবে না। সরকার যদি আমাদের দিকে নজর না দেয়, অনেক কৃষক পথে বসবে।
একই এলাকার কৃষক আব্দুর রহমান বলেন, হঠাৎ বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে আমার ধান। দুই কাঠা জমিতে কফি লাগিয়েছিলাম- সেটাও নষ্ট হয়ে গেছে। এমনভাবে বৃষ্টি আসবে কে জানত? দিন এনে দিন খাই, এখন কীভাবে চলবো বুঝতে পারছি না।
বিজ্ঞাপন
শেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোহাম্মদ সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আমরা আগেই মাঠপর্যায়ে কৃষকদের সতর্ক করেছিলাম, তাই ক্ষতি কিছুটা কম হয়েছে। তবে আলু ও সরিষা চাষে কিছুটা বিলম্ব হবে। কোথাও কোথাও ধান ভিজে গেছে, তবে তা ব্যাপক ক্ষতি নয়। মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কাজ করছেন। পানি নেমে গেলে প্রকৃত ক্ষতির চিত্র জানা যাবে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করে প্রণোদনার বিষয়েও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হবে।
কৃষি বিভাগ জানায়, বৃষ্টির কারণে রোপণ মৌসুমের কাজ কিছুটা বিলম্বিত হলেও আবহাওয়া অনুকূলে এলে চাষাবাদে আবার গতি ফিরবে।
এদিকে টানা বৃষ্টিতে শেরপুর শহরসহ বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। অনেক গ্রামীণ সড়ক ও নিচু এলাকা পানিতে ডুবে যোগাযোগ ব্যবস্থায় ভোগান্তি তৈরি হয়েছে। স্থানীয় কৃষকদের আশঙ্কা, দ্রুত সরকারি সহায়তা না পেলে টানা বৃষ্টিতে আমন ধান ও শীতকালীন ফসলের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা তাদের জন্য কঠিন হবে।
নাইমুর রহমান তালুকদার/এআরবি