নারায়ণগঞ্জ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র
ডিসির তৎপরতায় চালু হলো সিজারিয়ান সেবা
নারায়ণগঞ্জে মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতির পাশাপাশি প্রতি মাসে প্রায় ৪০০ গর্ভবতী নারীর সেবা, ৩০টি স্বাভাবিক প্রসব এবং ৪ থেকে ৫টি সিজারিয়ান সেকশন পরিচালিত হয়। তবে কেন্দ্রের মনোপোলার ডায়াথার্মি মেশিন অকেজো হয়ে পড়ায় ১৮ অক্টোবর থেকে সিজারিয়ান সেকশন বন্ধ হয়ে যায়।
জেলা মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার (ক্লিনিক) ডা. আফসানা জাহান ১৮ অক্টোবর পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক শহিদুল ইসলামকে লিখিতভাবে জানান যে, ডায়াথার্মি মেশিন নষ্ট থাকায় সিজারিয়ান অপারেশন করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন ও রুটিন অপারেশন ব্যাহত হচ্ছে। তিনি জরুরি ভিত্তিতে একটি নতুন মেশিন সরবরাহের অনুরোধ জানান।
বিজ্ঞাপন
পরবর্তীতে বিষয়টি ৫ নভেম্বর জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় উপস্থাপন করেন উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম। সমস্যার গুরুত্ব অনুধাবন করে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা জেলা পরিষদ থেকে দ্রুত একটি ডায়াথার্মি মেশিন উপহার হিসেবে দেওয়ার নির্দেশ দেন।
এরই ধারাবাহিকতায় রোববার (৯ নভেম্বর) ডায়াথার্মি মেশিনটি নারায়ণগঞ্জ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বিজ্ঞাপন
ডা. আফসানা জাহান বলেন, মেশিন বিকল থাকায় দীর্ঘদিন ধরে সিজারিয়ান সেবার জন্য মায়েদের ভিক্টোরিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করতে হচ্ছিল। আমরা হতাশ ছিলাম, কারণ পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের বাজেটে নতুন মেশিন কেনার সুযোগ ছিল না। কিন্তু ডিসি স্যার এত দ্রুত সাড়া দেবেন, তা আমরা ভাবিনি। তিনি দ্রুত সব পদক্ষেপ নিয়ে আজ আমাদের হাতে মেশিনটি তুলে দিয়েছেন।
পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক শহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি জানার পরই আমি পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর মেশিনের জন্য আবেদন করেছিলাম, কিন্তু বাজেট স্বল্পতার কারণে তা মেলে নাই। জেলা প্রশাসকের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “ডিসি স্যার স্বাস্থ্য খাতকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখেন। এর আগেও গর্ভবতী মায়েদের জন্য জরুরি ১ লাখ আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড ট্যাবলেট সংকটের সময় তিনি সহায়তা করেছিলেন। আজ আবার মেশিনটি প্রদান করলেন।
মেশিন হস্তান্তর অনুষ্ঠানে জেলা প্রশাসক জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, আমরা বিশ্বাস করি, মায়ের স্বাস্থ্য ভালো না থাকলে সন্তানের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে না। তাই মাতৃস্বাস্থ্যের প্রতি সবসময় বিশেষ গুরুত্ব দেই, ভবিষ্যতেও দেব।
স্বাস্থ্যকর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, মায়েদের অনেকেই অসহায় ও অশিক্ষিত। তাদের প্রতি আন্তরিকতা দেখিয়ে কাজ করবেন, যেন তাদের স্বাস্থ্যসেবা কোনোভাবেই ঝুঁকির মধ্যে না পড়ে।
জেলা প্রশাসক জানান, কেন্দ্রের চাহিদা অনুযায়ী গ্লুকোমিটার ও রক্তচাপ মাপার মেশিনও দ্রুত সরবরাহ করা হবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. আলমগীর হোসাইন, বিএনপির সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা মইনুদ্দিন আহমাদ প্রমুখ।
আরএআর