আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার রায় ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন মামলার অন্যতম সাক্ষী ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার সোহাগ। রোববার (৯ নভেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই দাবি জানান। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেন, শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার সাক্ষীদের বিষয়ে ট্রাইব্যুনাল মিথ্যাচার করছে।

সংবাদ সম্মেলনে শাহরিয়ার সোহাগ বলেন, শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য ট্রাইব্যুনাল থেকে কোনো সাক্ষীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়নি। অথচ ট্রাইব্যুনালে তিনবার সাক্ষী হাজিরে ব্যর্থতার কথা উল্লেখ করে সংবাদ প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বোঝানোর চেষ্টা করা হয়েছে, মামলার সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিতে আসছেন না। বিষয়টি জানার পর মামলার অন্তত পাঁচজন সাক্ষী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। আমরা ট্রাইব্যুনালের এমন কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ জানাই।

তিনি আরও বলেন, শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলার বিচারকে আমরা দুই হাজার শহীদের ন্যায্য বিচারের প্রতীক হিসেবে দেখি। এ মামলার রায়ের জন্য সারা দেশের মুক্তিকামী মানুষ অপেক্ষা করছে। আমরা চাই, দ্রুত বিচারিক কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হোক। সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিতে প্রস্তুত। আমরা চাই নির্বাচনের আগেই এই মামলার রায় ঘোষণা করা হোক। এই বিচার কার্যক্রমই নির্ধারণ করবে গণঅভ্যুত্থান সফল হয়েছে কি না।

শাহরিয়ার সোহাগ বলেন, যারা অতীতে ক্যাম্পাসে সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়েছে এবং যাদের শহীদ আবু সাঈদ হত্যা মামলায় অন্তর্ভুক্ত করা সম্ভব হয়নি, তাদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন একটি মামলা করেছে। সেটি অস্ত্র ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মামলা হওয়ার কথা থাকলেও প্রশাসন সেটিকে বিস্ফোরক আইনে মামলা করেছে। এতে মামলার গুরুত্ব কমে গেছে। আমরা প্রশাসনের কাছে ২৮ জন শিক্ষক-কর্মকর্তার নাম ও প্রমাণ জমা দিলেও তারা মামলায় মাত্র ১৩ জনের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে। এতে ১০ থেকে ১২ জন সাক্ষী থাকলেও সাত থেকে আট মাসে মাত্র একজনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছে।

জুলাই আন্দোলনের সম্মুখসারির এই শিক্ষার্থী আরও বলেন, কিছুদিন আগে ইউজিসি থেকে জুলাই আন্দোলনকারীদের তালিকা চাওয়া হয়েছিল। আমরা সেই অনুযায়ী তালিকা পাঠিয়েছি। সম্প্রতি ইউজিসির প্রধান কর্মকর্তা জুলাইযোদ্ধাদের সতর্ক থাকার যে বার্তা দিয়েছেন, আমরা তার তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আমরা দেখেছি, সম্প্রতি দেশে দুজন জুলাইযোদ্ধা আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রচার করা হলেও তাদের দেহে আঘাতের চিহ্ন ছিল। আমরা শহীদ আবু সাঈদ হত্যার বিচার ও জুলাইযোদ্ধাদের নিরাপত্তা চাই।

এ সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের গেজেটভুক্ত জুলাইযোদ্ধাদের নিয়ে ‘জুলাই সংগ্রাম ঐক্য পরিষদ’ নামে একটি সংগঠনের আত্মপ্রকাশের ঘোষণা দেন শাহরিয়ার সোহাগ।

ফরহাদুজ্জামান ফারুক/এআরবি