ফেনীর পরশুরামে একটি পরিত্যক্ত ঘরের মাসিক ১ লাখ ২৫ হাজার ৪০৭ টাকার 'ভুতুড়ে' বিদ্যুৎ বিল নিয়ে এলাকায় চাঞ্চল্য তৈরি হয়। পরে গ্রাহকের অভিযোগ ও গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর যাচাই করে পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ বিলটি সংশোধন করে মাত্র ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে।

ভুক্তভোগী সূত্রে জানা গেছে, পরশুরামের চিথলিয়া ইউনিয়নের নোয়াপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের রেজু মিয়া পাঁচ বছর ধরে পরিবার নিয়ে ঢাকায় বসবাস করছেন। গ্রামের বাড়িতে তাদের একটি পরিত্যক্ত ঘর রয়েছে, যেখানে প্রতিদিন সন্ধ্যায় শুধু একটি বাল্ব জ্বলে। আগে সেই সংযোগে সব সময় জিরো ইউনিটের বিলই আসত। কিন্তু গত সোমবার (১০ নভেম্বর) সকালে পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মীরা বিলের কাগজ নিয়ে গেলে প্রকাশ পায় এই ভুতুড়ে বিল। ১৩ নভেম্বর বিদ্যুৎ বিল পরিশোধের শেষ তারিখ উল্লেখ ছিল।

ভুক্তভোগীর ছেলে আমির হোসেন জুয়েল বলেন, আমরা গ্রামের বাড়িতে থাকি না। মাঝেমধ্যে ঢাকা থেকে গেলে চাচার বাড়িতে থাকি। আমাদের একটি পরিত্যক্ত ঘর আছে, যেখানে শুধু সন্ধ্যায় একটি লাইট জ্বলে। আমার চাচাতো ভাই বিলের কাগজ পেয়ে বিষয়টি জানালে আমরা হতবাক হয়ে যাই। পরে আমরা এ নিয়ে পরশুরাম পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে জানিয়েছিলাম। তারা আমাদের আগের মাসের বিলের কাগজ পাঠানোর জন্য বলেছিল। বর্তমানে ওই মিটারের বিদ্যুৎ বিল ৬৫ টাকা এসেছে। ইতোমধ্যে বিলের ৬৫ টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে পরশুরাম পল্লী বিদ্যুৎ জোনাল অফিসের ডিজিএম সুহেল আখতার বলেন, বিদ্যুৎ বিলটি ভুলবশত তৈরি করা হয়েছিল। ইতোমধ্যে সংশোধন করা বিল গ্রাহকের কাছে পাঠানো হয়েছে এবং গ্রাহক সেটি পরিশোধও করেছেন। এ ছাড়া, এ ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্তে কারো অবহেলা পাওয়া গেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

'মাঠে না গিয়ে অফিসে বসে বিল তৈরি করা হয়’-গ্রাহকদের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, অফিসে বসে তো বিদ্যুৎ বিল তৈরি করা সম্ভব না। মানুষ মাত্রই ভুল, কাজ করতে গেলে ভুল হবেই। ভুল হলে আমরা তা সংশোধন করে দেওয়ার চেষ্টা করি।

প্রসঙ্গত, এর আগে গত ১১ নভেম্বর পরিত্যক্ত ঘরে বিদ্যুৎ বিল লাখ টাকা, কর্মকর্তা বললেন ‘মানুষ মাত্রই ভুল’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে অনলাইন নিউজ পোর্টাল ঢাকা পোস্ট। তারপর থেকেই নানা আলোচনার প্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা এ নিয়ে সচেষ্ট হন।

তারেক চৌধুরী/এএমকে