আশুগঞ্জ রেলস্টেশনে বহু প্রতীক্ষিত পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের অনুমোদন
ঢাকা-চট্টগ্রাম রেল পথের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ যোগাযোগ কেন্দ্র আশুগঞ্জ রেলস্টেশন একটি ‘বি-গ্রেড’ স্টেশন। প্রতিদিন হাজারো যাত্রী চলাচল করলেও স্টেশনে দীর্ঘদিন ধরে কোনো পুলিশ ফাঁড়ি ছিল না। ফলে চুরি, টিকিট কালোবাজারি, প্ল্যাটফর্মে বিশৃঙ্খলা, নারীদের নিরাপত্তাজনিত সমস্যা এসব বিষয়ে যাত্রীদের অভিযোগ দীর্ঘদিনের।
তবে সেসব অভিযোগের অবসান ঘটিয়ে বহু বছর পর আশুগঞ্জ রেলস্টেশনে একটি পূর্ণাঙ্গ পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের অনুমোদন দিয়েছে রেলওয়ে পুলিশ হেডকোয়ার্টার। রোববার (১৬ নভেম্বর) দুপুরে রেলওয়ে পুলিশের ডিআইজি, অতিরিক্ত আইজি (ভারপ্রাপ্ত) ব্যারিস্টার মো. জিল্লুর রহমানের স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এই অনুমোদন বিষয়টি জানা যায়। তবে গত ১৩ নভেম্বর (বৃহস্পতিবার) চিঠির অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল।
বিজ্ঞাপন
ওই চিঠিতে উল্লেখ রয়েছে, আশুগঞ্জ রেলস্টেশন স্টেশন এলাকায় টহল, যাত্রী নিরাপত্তা, আইন–শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জরুরি সেবায় গতি বৃদ্ধির লক্ষে পুলিশ ফাঁড়িতে ১ জন সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই), ১ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইন্সপেক্টর (এএসআই), ২ জন নায়েক, ৫ জন কনস্টেবল পদায়ন করা হবে।
এদিকে পুলিশ ফাঁড়ি চালু হলে রেলযাত্রীদের নিরাপত্তা আরও বাড়বে বলে প্রত্যাশা রেল যাত্রী নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করা সামাজিক সংগঠন ঐক্যবদ্ধ আশুগঞ্জের।
বিজ্ঞাপন
সংগঠনটির স্বেচ্ছাসেবক ও সাংবাদিক আল মামুন জানান, দীর্ঘ দিন ঐক্যবদ্ধ আশুগঞ্জ রেলস্টেশনে নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা ও যাত্রীদের নিরাপত্তা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। তবে সেটিই যথেষ্ট নয়, সেজন্য একটি আস্থায়ী পুলিশ ফাঁড়ির জন্য রেল কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানিয়েছি। অতঃপর রেল কর্তৃপক্ষের বিশেষ বিবেচনায় আশুগঞ্জ রেলওয়ে ফাঁড়ি অনুমোদন পেয়েছে। এতে প্ল্যাটফর্ম ও রেললাইন নিরাপত্তা সুদৃঢ় হবে। সেই সাথে চুরি, মাল লুটপাট, টিকিট কালোবাজারি কমে আসবে। তেমনি ভ্রাম্যমাণ অপরাধী, ছিনতাইকারী দমন সহজ হবে যাত্রী বিশেষ করে নারী ও শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে।
আরেক স্বেচ্ছাসেবী ও সাংবাদিক ইসহাক সুমন জানান, আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, আশুগঞ্জ রেল স্টেশনে পুলিশ ফাঁড়ি অনুমোদন হয়েছে। আশুগঞ্জবাসীর দীর্ঘদিনের দাবি ছিল এই পুলিশ ফাঁড়িটি স্থাপনের। আর এই দাবি বাস্তবায়নের জন্য পেছন থেকে যিনি কাজ করেছেন আমাদের আশুগঞ্জের গর্ব প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের সচিব মাহমুদুল হোসাইন খান হেলাল ভাইয়ের অক্লান্ত পরিশ্রমে আজ আমরা পুলিশ ফাঁড়ি পেতে যাচ্ছি। যিনি আশুগঞ্জ রেল স্টেশনের উন্নয়নের জন্য পেছন থেকে কাজ করে যাচ্ছেন। রোববার দুপুরে মাহমুদুল হোসাইন খান ভাই অনুমোদনের চিঠিটি আমার কাছে পাঠিয়েছেন। তাৎক্ষণিক চিঠিটি দেখে আনন্দে আমি নিজেই আবেগ আপ্লূত হয়ে পড়ি। আমাদের দীর্ঘদিনের দাবিগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি দাবি বাস্তবায়নের পথে। মহান আল্লাহ তায়ালার কাছে প্রার্থনা করি আল্লাহ তায়ালা যেন আপনার নেক হায়াত দান করুক ।
এদিকে, আখউড়া রেলওয়ে থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এস এম শফিকুল ইসলাম বলেন, অস্থায়ী রেলওয়ে ফাঁড়ির অনুমোদনের নামের তালিকায় আশুগঞ্জের নামটি চোখে পড়েছে। এর আগে বিজয়নগর উপজেলার আজমপুর, আশুগঞ্জসহ একাধিক রেলওয়ে থানা পুলিশ ফাঁড়ির জন্য আবেদন করা ছিল।
মাজহারুল করিম অভি/এমএএস