লক্ষ্মীপুরের বিএনপি নেতাকে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩
ছবি : বামে নিহত বিএনপি নেতা আবুল কালাম জহির, ডানে পলাতক আসামি কাউছার মানিক বাদল ওরফে পিচ্চি কাউছার
লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জে বিএনপি নেতা আবুল কালাম জহিরকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যার ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রোববার (১৬ নভেম্বর) রাত সাড়ে ৭টার দিকে চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়জুল আজীম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ইমন হোসেন (২১), আলমগীর হোসেন (৪০) ও হুসাইন কবির সেলিম (৫০)।
তবে ঘটনার সঙ্গে জড়িত আলোচিত পলাতক কাউছার মানিক বাদল ওরফে পিচ্চি কাউছার এখনও ধরা পড়েনি। আটক ইমন লতিফপুর গ্রামের শাহ আলমের ছেলে, আলমগীর একই এলাকার মমিন উল্যাহর ছেলে এবং সেলিম ওই এলাকার নুরুল আমিনের ছেলে।
বিজ্ঞাপন
শনিবার (১৫ নভেম্বর) রাতে হত্যার পর কাউছার ফেসবুকে আউট লিখে নিজের ক্রিকেট খেলার একটি ভিডিও পোস্ট করেন। নিহতের পরিবারের অভিযোগ ও পুলিশের বক্তব্যে তার জড়িত থাকার বিষয় উঠে আসে। সংবাদ প্রকাশের পর ক্ষিপ্ত হয়ে কাউছার ফেসবুকে একটি লেখা পোস্ট করে বলেন, এদেশে বড় সন্ত্রাস সাংবাদিকেরা, আমার কাছে সিসিটিভির ভিডিও আছে, তার পরও কেমনে নিউজ করে মার্ডার হওয়ার, এক ঘন্টা আগে ভিডিও পোস্ট করেছি, ওই এখন হই গেছে খুনে ইঙ্গিত।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহিরকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করা হয়। তিনি পশ্চিম লতিফপুর গ্রামের মনছুর আহমেদের ছেলে। জহিরের সঙ্গে স্থানীয় ছাত্রদল কর্মী কাউছারের আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি এলাকার একটি খেলার আয়োজনকে কেন্দ্র করে বিরোধ তীব্র হয়ে ওঠে। এর জের ধরে হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
কাউছারের বিরুদ্ধে হত্যাসহ কয়েকটি মামলার পলাতক আসামি হিসেবে অভিযোগ রয়েছে। অন্যদিকে আবুল কালামের বিরুদ্ধে ৬টি মাদকসহ মোট ৭টি মামলা এবং একাধিক জিডি আছে।
চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফয়জুল আজীম বলেন, ভোরে অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। হত্যার ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। সন্ধ্যায় মরদেহ দাফন করা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হবে। আমরা ঘটনাটিকে গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করছি। জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হবে। অভিযান চলছে।
প্রসঙ্গত, পিচ্চি কাউছারের পুরো নাম কাউছার মানিক বাদল। তিনি চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের ছাত্রদলের সদস্য। কাউছার এক হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত এবং আরেকটি হত্যা মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত। দীর্ঘদিন তিনি পলাতক ছিলেন। গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তিনি এলাকায় প্রকাশ্যে আসেন। এরপর বিভিন্ন অপরাধে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে। ৭ আগস্ট ২০২৪ তাকে ছাত্রদল থেকে বহিস্কার করা হয়, পরে ৪ নভেম্বর ওই বহিস্কারাদেশ প্রত্যাহার করা হয়।
হাসান মাহমুদ শাকিল/এআরবি