শহীদ ওয়াসিম আকরামের বাবা
‘জনগণের সামনে শেখ হাসিনার রায় কার্যকর করা হোক’
চব্বিশের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে চট্টগ্রামের প্রথম শহীদ ওয়াসিম আকরামের বাবা শফিউল আলম বলেছেন, অতি দ্রুত শেখ হাসিনাকে দেশে এনে জনগণের সামনে রায় কার্যকর করা হোক। সন্তান হারানোর বেদনা যে ভোগ করে, সে-ই বুঝতে পারে। শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকার আমার ছেলেকে হত্যা করেছে।
সোমবার (১৭ নভেম্বর) মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার খবরে রাত ৯টার দিকে কক্সবাজারের পেকুয়ার নিজ বাড়িতে প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে এ মন্তব্য করেন তিনি।
বিজ্ঞাপন
শফিউল আলম আরও বলেন, রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। এই বিচারে সত্যের প্রতিফলন হয়েছে। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা। জীবিত থাকতে শেখ হাসিনার ফাঁসি দেখতে চাই। আমার ছেলে কোনো অপরাধ করেনি।
২০২৪ সালের ১৬ জুলাই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় বেলা ৩টার দিকে চট্টগ্রামের মুরাদপুর এলাকায় আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের দ্বিমুখী সংঘর্ষে ওয়াসিম আকরাম শহীদ হন। চট্টগ্রাম কলেজের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ওয়াসিম নগরীর চকবাজার এলাকার একটি মেসে থাকতেন। তিনি চট্টগ্রাম কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন। পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের দক্ষিণ মেহেরনামা বাজার এলাকায় ওয়াসিমের পৈতৃক বাড়ি। তার মৃত্যুর পর প্রবাসী বাবা শফিউল আলম কাতার থেকে দেশে ফিরে আসেন।
বিজ্ঞাপন
প্রসঙ্গত, সোমবার দুপুরে বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ শেখ হাসিনা ও সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
দুপুর সাড়ে ১২টায় রায় পড়া শুরু হয় এবং দণ্ড ঘোষণার মধ্য দিয়ে বেলা ২টা ৫৪ মিনিটে রায় শেষ হয়। মামলার তিন আসামির মধ্যে শেখ হাসিনা ও আসাদুজ্জামান পলাতক। দুজনই বর্তমানে ভারতে অবস্থান করছেন। মামলায় গ্রেপ্তার থাকা একমাত্র আসামি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন নিজের দোষ স্বীকার করে অ্যাপ্রুভার বা রাজসাক্ষী হিসেবে ট্রাইব্যুনালে জবানবন্দি দেন। তাকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এই মামলার শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষ একাধিকবার উল্লেখ করে যে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী সব অপরাধের পরিকল্পনাকারী, হুকুমদাতা এবং সুপিরিয়র কমান্ডার বা সর্বোচ্চ নির্দেশদাতা ছিলেন শেখ হাসিনা।
ইফতিয়াজ নুর নিশান/এআরবি