আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। এই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে রাজবাড়ীর দুটি আসনেই বিএনপিসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা কাজ করছে। অনেকেই নিজের প্রার্থিতা জানান দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে শুভেচ্ছা বার্তা, প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ চালাচ্ছেন। নির্বাচনী আমেজ লক্ষ্য করা যাচ্ছে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝেও।

নির্বাচনী মাঠে অন্যান্য দলের প্রার্থীদের দেখা না গেলেও বিএনপি এবং জামায়াতের প্রার্থীরা মাঠে সরব রয়েছেন। বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীদের ব্যানার, ফেস্টুন এবং পোস্টারে ছেয়ে গেছে নির্বাচনী এলাকার সড়ক, মহাসড়ক, হাট-বাজার, গ্রাম ও পাড়া-মহল্লা। তবে প্রার্থিতার বিষয়ে আপাতত নিশ্চুপ জাপা এবং এনসিপিসহ অন্যান্য দল।

ইতোমধ্যেই রাজবাড়ী-১ (সদর ও গোয়ালন্দ) আসনে বিএনপি প্রার্থী ঘোষণা করেছে। অন্যদিকে রাজবাড়ী-২ (পাংশা- বালিয়াকান্দি- কালুখালী) আসন নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে দল। সেখানে এখনো প্রার্থী ঘোষণা করেনি তারা। শোনা যাচ্ছে শরিক দলের জন্য তারা আসনটি ছেড়ে দিতে পারে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী দুই আসনেই একক প্রার্থী ঘোষণা করে সুবিধাজনক অবস্থায় রয়েছে। খেলাফতে মজলিস দুই আসনেই তাদের প্রার্থী ঘোষণা করেছে।

এছাড়াও ইসলামী আন্দোলন, গণঅধিকার পরিষদ তাদের চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা না করলেও সম্ভাব্য প্রার্থীরা তাদের নির্বাচনী প্রচারণা চুপিসারে চালিয়ে যাচ্ছেন। অপরদিকে নির্বাচন নিয়ে জাতীয় নাগরিক পার্টিকে (এনসিপি) এখন পর্যন্ত মাঠে দেখা যায়নি। তবে তাদের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নাম লোকমুখে শোনা যাচ্ছে। 

সাধারণ ভোটাররা মনে করেছেন রাজবাড়ী-১ আসনে প্রার্থী অনেক থাকলেও মূল লড়াই হবে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর মধ্যে। বিএনপি চাইছে আসনটি পুনরুদ্ধার করতে। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামীও আসনটি ধরে রাখার চেষ্টা করছে।

জানা গেছে, ১৯৯১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজবাড়ী-১ আসনে বিএনপি মাত্র একবার ২০০১ সালে ক্ষমতায় ছিল। বাকি সময়ে আওয়ামী লীগ এই আসনে প্রভাব বিস্তার করেছে।

১৯৮৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির আক্কাস আলী মিয়া ও ১৯৮৮ সালে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মুন্সী আবদুল লতিফ রাজবাড়ী-১ আসনে জয়লাভ করেন। এরপর ১৯৯১ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের অ্যাডভোকেট ওয়াজেদ আলী চৌধুরী জয়ী হন। তার মৃত্যুর পর ১৯৯২ সালের উপ-নির্বাচনে এমপি হন আওয়ামী লীগের কাজী কেরামত আলী।

১৯৯৬ সালের ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে বিএনপির জাহানারা বেগম ও ১৯৯৬ সালের জুনের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের কাজী কেরামত আলী জয় পান। ২০০১ সালে এই আসনে এমপি হন বিএনপির আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম। এরপরই এই আসন চলে যায় আওয়ামী লীগের দখলে। ২০০৮ সালে বিএনপির আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়মকে পরাজিত করে এমপি হন আওয়ামী লীগের কাজী কেরামত আলী। এরপর তিনটি বিতর্কিত নির্বাচনেও জয়ী হন তিনি।

রাজবাড়ী-১ (সদর ও গোয়ালন্দ)

আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজবাড়ী-১ আসন থেকে বিএনপি থেকে তিনজন মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। তারা হলেন- বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও রাজবাড়ী-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম, কেন্দ্রীয় কৃষক দলের সহ-সভাপতি ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আসলাম মিয়া ও বিএনপি নেতা আব্দুস সালাম মিয়া। এই তিনজনের মধ্যে আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম ও অ্যাডভোকেট আসলাম মিয়া আলোচনায় ছিলেন। কিন্তু সকল জল্পনা কল্পনা শেষে কেন্দ্র থেকে মনোনয়ন দেওয়া হয় আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়মকে। দলীয় মনোনয়ন পেয়ে শেষ হাসি তিনিই হেসেছেন।

জানা গেছে, রাজবাড়ী-১ (সদর ও গোয়ালন্দ উপজেলা) আসনে মনোনয়নপ্রাপ্ত আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম ইতিপূর্বে ৩ বার বিএনপির মনোনয়নে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তার মধ্যে ২০০১ সালের ৮ম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী ও ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজিত হন। দলীয়ভাবে নির্বাচন বয়কট করার কারণে ২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি অংশগ্রহণ করেননি। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি দলীয় প্রার্থী হিসেবে অংশ নিলেও ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে নির্বাচনের দিন দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জন করেন। 

আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও পরবর্তীতে ২০১৪ সালে রাজবাড়ী জেলা বিএনপির সভাপতি নির্বাচিত হন। ২০০১ সালের বিএনপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনের আগে তিনি ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে ৩ টার্ম মেয়াদে রাজবাড়ী পৌরসভার চেয়ারম্যান (মেয়র) নির্বাচিত হন। তিনি রাজবাড়ী পৌরসভার তিন বারের নির্বাচিত মেয়র ও পরবর্তীতে বিএনপি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ায় তৃণমূল তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা ও রাজবাড়ীর উন্নয়নের রূপকার হিসেবে তার সুখ্যাতি রয়েছে।

আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়মের বাবা মৃত ডা. এ কে এম ওয়াহিদ ছিলেন হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক। মা মৃত রাজিয়া বেগম ছিলেন গৃহিণী। আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়মরা ৪ ভাই ও ৪ বোন। তিনি ভাইবোনের মধ্যে ৬ নম্বর।

আলী নেওয়াজ মাহমুদ খৈয়ম বলেন, দলের অভ্যন্তরে ও দলের বাইরে সমস্ত ভেদাভেদ ও সমস্ত মতবিরোধ নিরসন করে আমরা এক হয়ে সকলে মিলে আগামী নির্বাচনের জন্য কাজ করবো।

তিনি আরও বলেন, আমি নির্বাচিত হলে এই জনপদের মানুষের জন্য পদ্মা ব্যারেজ, পদ্মা সেতু, বিশ্ববিদ্যালয়, নদী বন্দর, রেলওয়ের ওয়ার্কশপ, এছাড়াও হাসপাতাল, অবকাঠামো, স্কুল, কলেজ, এই জনপদের ব্যবসা, বাণিজ্য, শিল্প, সংস্কৃতি- এগুলো নিয়ে আমি কাজ করবো।

এদিকে জামায়াত ইসলামী রাজবাড়ী-১ আসনের জন্য অনেক আগেই তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য এবং জেলা আমির, রাজবাড়ী বারের সিনিয়র আইনজীবী  অ্যাডভোকেট মো. নুরুল ইসলাম ইতিমধ্যে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন। তিনি নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন হাট-বাজার,পাড়া-মহল্লায়, গ্রামে গ্রামে প্রতিদিন গণসংযোগ ও কর্মী সমাবেশ করে যাচ্ছেন। অন্যদিকে জামায়াতের কর্মীরাও প্রতিদিনের প্রচারণায় নিজ নিজ এলাকায় তার পক্ষে কাজ করছেন এবং দাঁড়িপাল্লা মার্কায় ভোট চাচ্ছেন। জামায়াত তার সাংগঠনিক শক্তি এবং প্রার্থীর ব্যক্তি ইমেজ কাজে লাগিয়ে নির্বাচনী প্রচারণার মাঠে সবদিক থেকে এখন পর্যন্ত এগিয়ে রয়েছে।

আদর্শিকভাবে জামায়াতে দলীয় কোন্দল, গ্রুপিং বা বিভক্তি না থাকায় তিনি সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন। জামায়াতের সাংগঠনিক ঐক্য এবং শৃঙ্খলাই তার জয়ের পক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জামায়াতের বাইরের রাজনীতির সচেতন জনগণ মনে করছে।

জানা গেছে, জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মসজিসে শুরার সদস্য ও রাজবাড়ী জেলা শাখার আমির অ্যাডভোকেট মো. নুরুল ইসলাম ১৯৭৮ সালে ছাত্রশিবিরে যোগদান করেন। ১৯৭৯ সালে তিনি জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেন। 

১৯৮৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি এবং ২০০৯ সাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত কেন্দ্রীয় মসজিসে শুরার সদস্য ও রাজবাড়ী জেলা শাখার আমিরের দায়িত্ব পালন করছেন। এর আগে তিনি ১৯৯১ সালের জাতীয় নির্বাচনে এবং ১৯৯৩ সালের উপনির্বাচনে অংশ নিয়ে সম্মানজনক ভোট পেয়েছিলেন। ১৯৮৯ সাল থেকে তিনি রাজবাড়ী জেলা বার অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম একজন সদস্য।

জামায়াত মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলামের পৈতৃক বাড়ি গোয়ালন্দ পৌরসভা ৭নং ওয়ার্ড এলাকায়। কিন্তু তিনি দীর্ঘদিন ধরে রাজবাড়ী শহরের সজ্জনকান্দা এলাকায় থাকেন। গোয়ালন্দ উপজেলা এখন পর্যন্ত একমাত্র প্রার্থী হওয়ায় ভোটের দৌড়ে তিনি এগিয়ে আছেন বলেই অনেকেই মনে করছেন। তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় যথেষ্ট পরিচিত মুখ এবং বিভিন্ন সমাজ ও জনকল্যাণমূলক কাজের সাথে জড়িত।

গোয়ালন্দ উপজেলার বিভিন্ন এলাকার ভোটারদের সাথে কথা বলে জানা যায়, তারা তাদের উপজেলার একমাত্র প্রার্থীকেই ভোট দিতে চান। অনেকেই মনে করেন গোয়ালন্দ উপজেলার ভোটাররাই এবারের নির্বাচনে নির্ণয়ক শক্তি হিসেবে কাজ করবে। সদর উপজেলার ভোট ভাগাভাগি হলেও গোয়ালন্দের ভোট ভাগ হওয়ার সম্ভাবনা কম। এই সমীকরণ জামায়াত যদি ভালোভাবে কাজে লাগাতে পারে তাহলে জামায়াত প্রার্থীর বিজয়ের সম্ভাবনা অনেক বেশি বলে মনে করছে সচেতন মহল।

জামায়াত মনোনীত প্রার্থী ও জেলা আমির অ্যাডভোকেট মো. নুরুল ইসলাম বলেন, মহান আল্লাহ রব্বুল আলামিন আমাকে সুযোগ দিলে, জনগণ আমাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে, আমি নির্বাচিত হলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জেলার সকল উন্নয়নমূলক কাজ করবো। মাদক নির্মূল করবো। সুদ,ঘুষ ও দুর্নীতিমুক্ত জেলা গঠন করবো।

এদিকে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের প্রার্থী হিসেবে রাজবাড়ী জেলা শাখার সভাপতি হাফেজ মাওলানা ইলিয়াস আলী মোল্লাকে চূড়ান্তভাবে দল থেকে মনোনীত করা হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাকে কোনো নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে দেখা যায়নি। মাওলানা ইলিয়াস আলী রাজবাড়ী পৌরসভার বিনোদপুর কলেজপাড়া এলাকার বাসিন্দা। তিনি হেফাজতে ইসলাম রাজবাড়ী জেলা শাখার সভাপতি ও জেলা ইমাম কমিটির সভাপতি। তিনি ৫ বছর হেফাজতে ইসলাম জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও তিনি রাজবাড়ী শহরের ভাজনচালা মাদ্রাসার অধ্যক্ষ।

এছাড়াও গণঅধিকার পরিষদ থেকে রাজবাড়ী-১ আসনের জন্য জেলা শাখার সদস্য সচিব মো. রবিউল আজম ও জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ওমান প্রবাসী মো. জাহাঙ্গীর খান আলোচনায় রয়েছেন।

ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী হিসেবে রাজবাড়ী জেলা শাখার সভাপতি অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম খান জাহিদ হাসান ও ইসলামী আইন মজলিসের কেন্দ্রীয় সদস্য আমিনুল ইসলাম কাশেমী কেন্দ্রে গিয়ে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। কিন্তু এখনো চূড়ান্তভাবে কারও নাম ঘোষণা করা হয়নি। এজন্য তারা নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেননি।

অন্যদিকে জাতীয় নাগরিক পার্টির(এনসিপি) প্রার্থী হিসেবে কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহর নাম শোনা যাচ্ছে। তবে তাকে এলাকায় কোনো নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগ করতে দেখা যায়নি। দলের একটি সূত্র জানিয়েছে-  খালেদ সাইফুল্লাহর স্ত্রী এনসিপি নেত্রী ডা. তাসনিম জারা ঢাকা-৯ আসন থেকে নির্বাচন করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

খালেদ সাইফুল্লাহ রাজবাড়ী জেলার কৃতি সন্তান। তার বাড়ি সদর উপজেলার পাচুঁরিয়া ইউনিয়নের মুকন্দিয়া গ্রামে। তিনি পড়ালেখার সুবাদে দীর্ঘদিন লন্ডনে ছিলেন। সেখান থেকে তিনি ব্যারিস্টারি পড়া শেষ করেন। রাজবাড়ীর সন্তান হওয়ায় অনেকে ধারণা করছেন তিনি রাজবাড়ী-১ থেকে নির্বাচন করবেন। 

এ বিষয়ের এনসিপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ মুঠোফোনে ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমাদের মনোনয়ন ফর্ম বিক্রি শুরু হয়েছে। রাজবাড়ী-১ এবং রাজবাড়ী-২ থেকে যারা নমিনেশন চাই, এনসিপি থেকে তাদেরকে আমরা আবেদন করার জন্য ইনভাইট করেছি। এই প্রক্রিয়াটা শেষে পার্টি সিদ্ধান্ত নেবে কাকে মনোনয়ন দেওয়া হবে। পার্টি যাকে মনোনয়ন দেবে সেই নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নেবে।

জেলার তরুণ ভোটাররা বলছে, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন যেহেতু ৫ আগস্ট পরবর্তী সময়ে এসেছে, সেহেতু তাদের প্রত্যাশা থাকবে জেন-জির যে আকাঙ্ক্ষা ৫ আগস্ট পরবর্তীতে ও গণঅভ্যুত্থানের শক্তির যে আকাঙ্ক্ষা সেই আকাঙ্ক্ষার যেন বাস্তবায়ন হয়। যারা মনোনয়ন পেয়েছেন এবং আগামীতে যারা এমপি হবেন তাদের কাছে আমাদের আকাঙ্ক্ষা থাকবে বাংলাদেশে থেকে বাংলাদেশপন্থি রাজনীতি করার জন্য এবং দিল্লির গোলামি থেকে বেরিয়ে আসার জন্য। আমরা শুধু চাই গণঅভ্যুত্থানের যে আকাঙ্ক্ষা তা যেন পরবর্তী সংসদ সদস্যদের কার্যক্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষ বুঝে পেতে পারে।

জেলার সাধারণ ভোটাররা বলেন, রাজবাড়ীতে যেই সংসদ সদস্য নির্বাচিত হবেন তার প্রতি আমাদের প্রত্যাশা হচ্ছে রাজবাড়ীকে গ্লোবালাইজেশনের আওতায় আনতে হবে এবং রাজবাড়ীকে শিল্পনগরী হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। আমাদের অপার সম্ভবনা রয়েছে। আমাদের নদী আছে, রাস্তাঘাট আছে, যেহেতু আমরা ঢাকার কাছে তাই রাজবাড়ীতে যদি একটি পদ্মা সেতু ও পদ্মা ব্যারাজ হয় তার মাধ্যমে আমরা সরাসরি সম্পৃক্ত হতে পারবো ঢাকার সাথে। যার মাধ্যমে রাজবাড়ীর আপামর জনসাধারণের কর্মসংস্থান হবে এবং জীবনমান উন্নয়ন হবে।

প্রসঙ্গত, পদ্মা বিধৌত ও রেলের শহর রাজবাড়ী। ১৯৮৪ সালে গোয়ালন্দ মহকুমা থেকে রাজবাড়ী জেলার নামকরণ হয়। রাজবাড়ী-১ সংসদীয় আসন রাজবাড়ী সদর উপজেলা ও গোয়ালন্দ উপজেলা নিয়ে গঠিত। এই দুই উপজেলায় রয়েছে ১৮টি ইউনিয়ন ও ২টি পৌরসভা। এ আসনে মোট ভোটার সংখ্যা ৪ লাখ ৫২ হাজার ১৯২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ২৯ হাজার ৩৪৩, নারী ২ লাখ ২২ হাজার ৮৩৯ এবং তৃতীয় লিঙ্গের (হিজড়া) ভোটার ১০ জন।

আরএআর