গাইবান্ধায় একদিনের ব্যবধানে বিএনপির দুই সিনিয়র নেতার মৃত্যু
এক দিনের ব্যবধানে দুই প্রভাবশালী নেতাকে হারিয়ে গাইবান্ধা জেলা বিএনপিতে নেমে এসেছে গভীর শোকের ছায়া। একই সপ্তাহে দলীয় দুই গুরুত্বপূর্ণ নেতা চলে যাওয়ায় নেতাকর্মীরা হতবিহ্বল হয়ে পড়েছেন।
গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক, রামচন্দ্রপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এবং রামচন্দ্রপুর ইউনিয়নের পরপর দুই মেয়াদের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম (৬০) মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) দুপুরে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। দীর্ঘদিন ধরে তিনি বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন। অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
বিজ্ঞাপন
রফিকুল ইসলাম ছিলেন এলাকায় শিক্ষা, সড়ক, অবকাঠামো উন্নয়ন ও সামাজিক সেবায় নিবেদিতপ্রাণ এক নেতা। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালনকালে তিনি রামচন্দ্রপুরের উন্নয়নে রেখেছেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। সহকারী শিক্ষক হিসেবে তার আন্তরিকতা, মানবিকতা ও দায়িত্বশীলতা তাকে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের কাছে বিশেষভাবে জনপ্রিয় করে তুলেছিল।
তার মৃত্যুসংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই পরিবার-পরিজন, সহকর্মী শিক্ষক, রাজনৈতিক অঙ্গন ও স্থানীয় জনগণের মাঝে নেমে আসে গভীর শোকের ছায়া। বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা তার রুহের মাগফিরাত কামনা করে পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। পরিবার জানিয়েছে, জানাজা ও দাফনের সময়সূচি পরে জানানো হবে।
বিজ্ঞাপন
মাত্র একদিন আগে, সোমবার (২৪ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে ইন্তেকাল করেন গাইবান্ধা জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো. আব্দুল আউয়াল আরজু (৬৬)। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে রংপুর হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ে রেখে গেছেন। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কাচারী বাজার জামে মসজিদের সভাপতি এবং গাইবান্ধা বিএনপির নিবেদিতপ্রাণ একজন সংগঠক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন।
মঙ্গলবার বাদ জোহর গাইবান্ধা ইসলামিয়া হাইস্কুল মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে পৌর গোরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। জানাজায় স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি, রাজনৈতিক নেতাকর্মী ও সর্বস্তরের মানুষের ঢল নেমে আসে। তার মৃত্যুতে জেলা ও উপজেলা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, জিয়া পরিষদ, ছাত্রদলসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠনের নেতারা গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
পরপর দুইজন অভিজ্ঞ, সৎ ও জনপ্রিয় নেতার মৃত্যুতে গাইবান্ধা জেলা বিএনপি এখন শোকে স্তব্ধ। নেতাকর্মীরা বলছেন, দলের জন্য এটি এক অপূরণীয় ক্ষতি, যা এত দ্রুত কাটিয়ে ওঠা সম্ভব নয়।
রিপন আকন্দ/এআরবি