গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জে এক ব্যক্তিকে অফিসে আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে দাদন ব্যবসায়ী বেলাল শেখের (৪৪) বিরুদ্ধে। জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে অভিযোগ পাওয়ার পর পুলিশ ওই দাদন ব্যবসায়ীকে আটক করে।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী আজাদুল ইসলাম বাদী হয়ে মঙ্গলবার (২৫ নভেম্বর) রাতে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেছেন।

মামলা সূত্রে জানা গেছে, সোমবার (২৪ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে ফুলবাড়ি ইউনিয়নের নাচাই কোচাই গ্রামের বাসিন্দা আজাদুল ইসলাম (৪৫) স্থানীয় ফুটানি বাজারে চা খেতে গেলে তাকে বেলাল শেখ জোর করে তার অফিসে তুলে নিয়ে যায়। পরে অফিসের ভেতরে বেলাল শেখের ছেলে ও মেয়ে জামাই ভয়ভীতি দেখিয়ে আজাদুল ইসলামকে আটকে রাখে। এ সময় তার পকেটে থাকা ১২ হাজার ৫০০ টাকা জোর করে নিয়ে নেয়।

ঘটনার সময় বাজারে উপস্থিত লোকজন বাধা দিলে বেলাল ও তার স্বজনেরা তাদের ওপর চড়াও হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে স্থানীয়রা বাধ্য হয়ে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করে। খবর পেয়ে গোবিন্দগঞ্জ থানার এসআই সেলিম রেজা পুলিশ ফোর্সসহ সেখানে গিয়ে আজাদুলকে উদ্ধার করেন এবং দাদন ব্যবসায়ী বেলাল শেখকে আটক করে। তবে তার ছেলে ও মেয়ে জামাই পালিয়ে যায়।

ভুক্তভোগী আজাদুল ইসলাম বলেন, এক বছর আগে বেলালের কাছ থেকে আমি এক লাখ টাকা দাদনে নেই মাসিক ১৫ হাজার টাকা সুদের চুক্তিতে। টাকা নেওয়ার সময় বেলাল তিনটি অলিখিত স্ট্যাম্পে আমার ও আমার স্ত্রী আছুদা বেগমের স্বাক্ষর নেয়। আমি নিয়মিত সুদের টাকা পরিশোধ করেছি এবং দুই মাস আগে সুদ–আসলসহ সব টাকা ফেরত দিয়েছি। কিন্তু টাকা পরিশোধের পর স্ট্যাম্প ফেরত চাইলে বেলাল তালবাহানা শুরু করে।

তিনি আরও বলেন, গত ১০ নভেম্বর স্ট্যাম্প ফেরত চাইতে বেলালের বাড়িতে গেলে বেলাল উল্টো অতিরিক্ত ৫০ হাজার টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে স্বাক্ষর করা স্ট্যাম্প ব্যবহার করে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে দেওয়ার হুমকিও দেন তিনি। পরে সোমবার আমাকে অফিসে আটকে রেখে টাকা আদায়ের চেষ্টা করা হয়।

আজাদুল বলেন, “আমি গরিব মানুষ। দিন আনি দিন খাই। সুদ-আসল সব পরিশোধ করেও তারা আরও ৫০ হাজার টাকা চাইছে। কাছে টাকা না থাকায় আমি তাদের পায়ে ধরে মাফ চাইছিলাম। কিন্তু তারা ভয়ভীতি দেখিয়েছে, মারার চেষ্টা করেছে। আমি এর সঠিক বিচার চাই।”

গোবিন্দগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বুলবুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ অভিযান চালিয়ে একজন দাদন ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ঘটনায় মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত বেলাল শেখকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

রিপন আকন্দ/আরকে