‘৬৪ জেলায় এসপি নিয়োগ একটি রাজনৈতিক দলের সুপারিশে হয়েছে’

৬৪ জেলায় নতুন পুলিশ সুপার (এসপি) নিয়োগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার প্রতি অনাস্থা জানিয়ে নওগাঁয় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা। রোববার (৩০ নভেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে শহরের মুক্তির মোড় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নওগাঁর ব্যানারে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

প্রতিবাদ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নওগাঁর নেতৃত্বে থাকা শিক্ষার্থী আরমান হোসেন, ফজলে রাব্বি, সাদনান সাকিব, মেহেদী হাসান, রাফিউল বারি রাজনসহ অন্যরা বক্তব্য দেন।

সমাবেশে বক্তারা বলেন, লটারি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পুলিশ সুপার (এসপি) নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে বলে মৌখিকভাবে জানানো হলেও এ সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া সংবাদমাধ্যমে প্রকাশ না করায় জনমনে নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হয়েছে। লটারির সময় সাংবাদিকদের উপস্থিত রাখার কথা বলা হলেও সেখানে কোনো সাংবাদিককে রাখা হয়নি। ফলে পূর্ব প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ হয়েছে। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পরে বলেছেন, সবাইকে যোগ্যতার ভিত্তিতে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, বিসিএস ক্যাডারে কর্মরত সকল কর্মকর্তা মেধাবী ও যোগ্য। তাহলে তিনি কোন মানদণ্ডে যোগ্যতা নির্ধারণ করেছেন, সেটিও স্পষ্ট করেননি। পূর্বে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় দক্ষতা থাকা সত্ত্বেও কয়েকজন কর্মকর্তাকে নিয়োগ না দেওয়া মাঠপর্যায়ের প্রশাসনকে অবাক করেছে। একই সঙ্গে কিছু বিতর্কিত জেলার পুলিশ সুপারদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, এই নিয়োগ একটি রাজনৈতিক দলের সুপারিশে করা হয়েছে। আমরা জেনেছি, লটারি কার্যক্রম পরিচালনার সময় স্বরাষ্ট্র সচিব ও পুলিশ প্রধান উপস্থিত ছিলেন না। তাদের উপস্থিতি ছাড়া এ নিয়োগ সম্পূর্ণ অবৈধ। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার লক্ষ্যে ৬৪ জেলায় যে এসপি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, তা সুষ্ঠু নির্বাচনের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াবে এবং আমরা মনে করি এতে পক্ষপাতমূলক নির্বাচন হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

সমাবেশে বক্তারা প্রধান উপদেষ্টার প্রতি তিন দফা দাবি জানান। তারা বলেন, ৬৪ জেলার এসপি নিয়োগ প্রক্রিয়া পুনর্মূল্যায়নের নির্দেশ দেওয়া ও তা সংবাদমাধ্যমে জনসমক্ষে প্রকাশ করা, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পূর্ব প্রতিশ্রুত নীতি- যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে পুনরায় পদায়ন নিশ্চিত করা ও যোগ্যতার মানদণ্ড স্পষ্ট করা এবং ভবিষ্যতে পদায়ন প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা আরও জোরদার করা প্রয়োজন।

দাবিগুলো দ্রুত বাস্তবায়ন না হলে কঠোর কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবেন বলে হুঁশিয়ারি দেন শিক্ষার্থীরা। পরে তারা নওগাঁর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের নিকট একটি স্মারকলিপি জমা দেন।

মনিরুল ইসলাম শামীম/এআরবি