‘শাটডাউন’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে মেহেরপুরে ৩০৮টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তালা ঝুলিয়েছেন সহকারী শিক্ষকরা। ফলে জেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ক্লাস ও চলমান পরীক্ষা কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে পড়েছে। হঠাৎ করে ক্লাস-পরীক্ষা না হওয়ায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে শিক্ষার্থীরা।

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে বিদ্যালয়গুলোতে গিয়ে দেখা যায়, মূল ফটক, অফিস কক্ষ ও ক্লাসরুমে তালা ঝুলিয়ে কর্মসূচি পালন করছেন সহকারী শিক্ষকরা। পরীক্ষা দিতে এসে অনেক শিক্ষার্থী হতাশ হয়ে বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন। ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকেরা।

গাংনী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, সরকারের ঘোষিত প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তিন দফা দাবি বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া গত ২২ দিন ধরে ঝুলে আছে। এ অবস্থায় দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি না থাকায় আমরা ‘পরীক্ষা বর্জন’ ও ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হয়েছি।

গাংনী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পারভেজ হোসেন রাজা জানান, অভিভাবকদের সহায়তায় গত দুই দিন তারা নিজেরা পরীক্ষা নেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু আজ সকালে বিদ্যালয়ে এসে দেখতে পান ক্লাসরুমসহ অফিস কক্ষ তালাবদ্ধ। ফলে পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি।

গাংনী থানা পাড়ার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণি শিক্ষার্থী সাব্বির বলেন, বিদ্যালয়ে এসে পরীক্ষা না হওয়ায় আবার বাড়ি ফিরে যেতে হচ্ছে। এতে পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে।

তৃতীয় শ্রেণির সান ও মুনের বাবা আতিকুর রহমান ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, পরীক্ষার জন্য আমি আমার মেয়েকে স্কুলে নিয়ে এসেছি। এসে দেখি বিদ্যালয়ের অফিস কক্ষ এবং শ্রেণিকক্ষগুলো তালাবদ্ধ। শিক্ষকদের আন্দোলনের কারণে আমাদের সন্তানদের পড়াশোনার ব্যাঘাত ঘটছে। আমরা চাই অন্তত শিক্ষার্থীদের ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে পরীক্ষাগুলো সুষ্ঠুভাবে নেওয়া হোক। এমনভাবে চলতে থাকলে আমাদের ছেলে-মেয়েকে কিন্ডারগার্টেন এ ভর্তি করাতে হবে।

মেহেরপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার সুকুমার মিত্র বলেন, জেলাতে বেশিরভাগ প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো শাটডাউন কর্মসূচি পালন করছে, যা কাম্য নয়। আমরা চাই সঠিক সময়ে শিক্ষকেরা ক্লাসরুমে ফিরে এসে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা সম্পন্ন করবেন। আগামীকাল থেকে বিদ্যালয়গুলোতে সঠিক সময়ে পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

তরিকুল ইসলাম/আরকে