শিক্ষকদের কর্মবিরতিতে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা নিলেন পরীক্ষা
১১তম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি আদায়ে শিক্ষকদের কর্মবিরতি ও বার্ষিক পরীক্ষা বর্জনের কারণে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচিতে ক্ষুব্ধ অভিভাবকরা বাধ্য হয়ে নিজেরাই নিয়েছেন শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে কুষ্টিয়া শহরতলীর ১৮নং লাহিনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটে এমন ঘটনা। এদিন নির্ধারিত সময়ে শিক্ষকরা পরীক্ষা না নেওয়ায় উত্তেজিত অভিভাবকরা শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করে নিজ উদ্যোগে পরীক্ষার আয়োজন করেন। খাতা সংগ্রহ, খাতা বিতরণ, শৃঙ্খলা রক্ষা—সব কিছুই সামলান তারা। এর আগে, অভিভাবকদের তীব্র বিক্ষোভের মুখে প্রায় এক ঘণ্টা পর বার্ষিক পরীক্ষা নিতে বাধ্য হন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
বিজ্ঞাপন
অভিভাবকদের অভিযোগ, শিক্ষকদের দাবি থাকতেই পারে, তবে পরীক্ষার সময়ে কর্মবিরতি কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। তারা বলেন, সন্তানদের সারা বছরের পরিশ্রমের মূল্যায়ন এই পরীক্ষা। আন্দোলনের কারণে সেটা নষ্ট হতে দিতে পারি না, তাই বাধ্য হয়ে নিজেরাই পরীক্ষার দায়িত্ব নিয়েছি।
বিজ্ঞাপন
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও কুষ্টিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি মাসুদুল করিম বলেন, অভিভাবকদের তীব্র চাপ এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসারের নির্দেশনার মুখে পরীক্ষা নিতে হয়েছে। পরীক্ষায় অভিভাবকরাই সহযোগিতা করছেন বলে তিনি জানান।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মফিজুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, অভিভাবকদের সহযোগিতায় আজকে লাহিনী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা নিয়েছেন প্রধান শিক্ষক। কারণ সহকারী শিক্ষকরা কর্মবিরতিতে। অভিভাবকদের সহযোগিতা ছাড়া পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না। জেলায় ৮০৫ প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে, তারমধ্যে ৭৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকরা পরীক্ষা নিচ্ছেন না। যেসব শিক্ষক আন্দোলনে জন্য পরীক্ষা নিচ্ছেন না তাদের তালিকা করা হচ্ছে।
আন্দোলনরত শিক্ষকরা জানান, ১১তম গ্রেডসহ তিন দফা দাবি বাস্তবায়নে ‘দৃশ্যমান অগ্রগতি’ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কমপ্লিট শাটডাউন ও সর্বাত্মক কর্মবিরতি কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। দ্রুত দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তারা।
এএমকে