স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সরকারি বাহিনীর এককভাবে বড় দুর্যোগ মোকাবিলা করা কঠিন
সরকারি বাহিনীর সদস্যদের পক্ষে এককভাবে ভূমিকম্প, অগ্নিকাণ্ড ও বন্যার মতো বড় দুর্যোগ মোকাবিলা করা কঠিন বলে মন্তব্য করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, এই ধরনের দুর্যোগে প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকরা পেশাদার বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করেন।
বিজ্ঞাপন
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পূর্বাচল এলাকায় মাল্টিপারপাস ট্রেনিং গ্রাউন্ডে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স আয়োজিত আন্তর্জাতিক ভলান্টিয়ার দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ভূমিকম্পের মতো জটিল দুর্যোগে শুধু পেশাদার বাহিনী পর্যাপ্ত নয়। সব শ্রেণির স্বেচ্ছাসেবকের প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি অত্যন্ত জরুরি। উপযুক্ত দক্ষতা ছাড়া কার্যকর উদ্ধার তৎপরতা সম্ভব নয়।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেন, সরকারি বাহিনীর সদস্যদের পক্ষে এককভাবে বড় দুর্যোগ মোকাবিলা করা দুরূহ। স্বেচ্ছাসেবীরা পেশাদার বাহিনীর সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছেন।
তরুণ প্রজন্মকে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে যুক্ত করতে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন বলে জানান তিনি। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ ছাড়া ভয়াবহ দুর্যোগ মোকাবিলা সম্ভব নয়। তাই সরকার আধুনিক প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছে, যোগ করেন উপদেষ্টা।
আন্তর্জাতিক স্বেচ্ছাসেবক দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, এই দিনটি হলো স্বেচ্ছাসেবকদের সুসংগঠিত করা, তাদের অবদানকে সম্মান ও স্বীকৃতি দেওয়ার দিন। বিশ্বের সব ভলান্টিয়ারদের প্রতি আমি আন্তরিক অভিনন্দন জানাই।
অনুষ্ঠানের শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, নির্বাচনের আগে ভারী অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান চলমান রয়েছে। এ ব্যাপারে সরকারের কোনো ব্যর্থতা নেই, মন্তব্য করেন তিনি।
আইজিপিকে সরিয়ে দেওয়ার দাবিতে পাঠানো লিগ্যাল নোটিশ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান এবং কোনো মন্তব্য করতে চাননি।
মূল বক্তব্যে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জানান, দেশের ৫৫ হাজারের বেশি স্বেচ্ছাসেবীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে, যা দুর্যোগ মোকাবিলায় বড় শক্তি হিসেবে কাজ করছে। ভূমিকম্প–অগ্নিদুর্যোগে স্বেচ্ছাসেবকরা আজ সত্যিকারের জনগণের বন্ধু হয়ে উঠেছে, বলেন তিনি।
স্বেচ্ছাসেবকদের দক্ষতা বাড়াতে নিয়মিত অনুষ্ঠান, দিবস উদযাপন, মহড়া ও গণসংযোগ কার্যক্রম অব্যাহত রাখার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মো. খোদা বখস চৌধুরী। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল, পরিচালক, উপপরিচালক ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী উপস্থিত ছিলেন।
দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা দুই শতাধিক প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবী অনুষ্ঠানে অংশ নেন।
এদিন স্বেচ্ছাসেবকদের অগ্নিনির্বাপণ অনুশীলন, ভূমিকম্পোত্তর উদ্ধার মহড়া, প্রদর্শনী ও সচেতনতামূলক সেশন অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাছাইকৃত ২২ জন ভলান্টিয়ারকে কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ ক্রেস্ট ও সনদপত্র প্রদান করেন।
তিনি স্বেচ্ছাসেবকদের নিরলস ও সাহসী অবদানের জন্য প্রশংসা করে বলেন, দেশের প্রতিটি দুর্যোগে তাদের দেশপ্রেম, আন্তরিকতা ও নির্ভীক অংশগ্রহণ অব্যাহত থাকবে বলে তিনি আশা করেন।
মেহেদী হাসান সৈকত/এএমকে