রাজবাড়ীতে মুড়িকাটা পেঁয়াজেও মিলছে না স্বস্তি
দেশের মোট উৎপাদনের ১৪ শতাংশ পেঁয়াজ রাজবাড়ী জেলায় উৎপাদন হলেও জেলায় পেঁয়াজের বাজারে স্বস্তি নেই। ভোক্তা পর্যায়ে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা কেজি দরে। এতে বিপাকে পড়েছেন ক্রেতারা। তাদের অভিযোগ, প্রশাসনের নজরদারির অভাবে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
এদিকে ব্যবসায়ীরা জানান, হঠাৎ করে উৎপাদন এলাকাগুলো থেকে পেঁয়াজ আসা কমে গেছে। প্রতি বছর এ সময় বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ চলে আসলেও এবার এখন পর্যাপ্ত সেই পরিমাণে আসেনি। এসব কারণে পাইকারি ও খুচরা বাজারে এর প্রভাব পড়েছে।
বিজ্ঞাপন
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে রাজবাড়ী শহরের বড় বাজার ঘুরে দেখা গেছে, খুচরা পর্যায়ে পুরাতন ভালো পেঁয়াজ প্রতি কেজি ১২০ থেকে ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পুরাতন মাঝারি ও ছোট পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। নতুন মুড়িকাটা পেঁয়াজ ১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া নিম্নমানের পেঁয়াজ সাইজ ভেদে ৭০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম খুচরা বাজার থেকে কেজিতে ৫/১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।
শরিফুল নামের এক ক্রেতা বলেন, পেঁয়াজ নিয়ে নৈরাজ্য চলছে। বাজারে পেঁয়াজ থাকার পরও বিক্রেতারা এক মাস ধরে বাড়তি দামে বিক্রি করছে। আজ এসে দেখি ভালো পেঁয়াজ ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
ব্যবসায়ী মান্নান বলেন, উৎপাদন অঞ্চল থেকে সরবরাহ কমে যাওয়ায় পাইকারি বাজারেই দাম বাড়ছে, যা দ্রুত প্রভাব ফেলেছে খুচরা বাজারে। মুড়িকাটা নতুন পেঁয়াজ আসতে শুরু করেছে। যদিও সেটা পরিমাণে খুব অল্প। আমদানি হলে দাম কমে আসবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ ইতোমধ্যে চলে এসেছে। তবে ডিসেম্বরের শেষে বাজারে মুড়িকাটা পেঁয়াজ সব চলে আসবে।
এবার জেলায় ৫ হাজার ৮৭৫ হেক্টর জমিতে মুড়িকাটা পেঁয়াজ উৎপাদনের টার্গেট নেওয়া হয়েছিল। তবে আমাদের সাফল্য ৫ হাজার ২৫০ হেক্টর জমি। এতে ৮০ থেকে ৮৫ হাজার টন পেঁয়াজ লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আশা করছি কৃষকরা তাদের ন্যায্য দাম পাবে। মুড়িকাটা পেঁয়াজ বাজারে আমদানি হলে দাম সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে। এছাড়া ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ খুব শিগগিরই মার্কেটে চলে আসবে। তখন ভোক্তা পর্যায়ে দাম কম যাবে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর রাজবাড়ী জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক (অ.দা.) মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, মুড়িকাটা নতুন পেঁয়াজ বাজারে আসতে শুরু করেছে। যদিও সেটা পরিমাণে খুব অল্প। কিছু দিনের ভেতর নতুন পেয়াজের আমদানি বাড়বে, দামও স্বাভাবিক হয়ে আসবে। তারপরেও নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম যেন স্বাভাবিক থাকে এবং নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি। আর্থিক জরিমানাসহ অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।
মীর সামসুজ্জামান সৌরভ/আরকে