শরীয়তপুরের জাজিরা উপজেলায় এক ব্যবসায়ীর দোকানের মালামাল লুট করে ঘর দখলের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সুরুজ মাদবরের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর দাবি, তিনি জমি কিনে সেখানে দোকানঘর নির্মাণ করে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছিলেন। কয়েকদিন আগে ওই নেতা ও তার ছেলে দলীয় প্রভাব দেখিয়ে দোকানসহ পুরো সম্পত্তি দখল করে নিয়েছেন। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে সুরুজ মাদবর বলছেন, দোকানের জমিটি তাদের ক্রয়কৃত।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত এক মানববন্ধনে এসব অভিযোগ করেন ভুক্তভোগী সোবহান মাদবর।

মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা জানান, জাজিরা উপজেলার ডুবিসায়বর বন্দর কাজীরহাট এলাকায় জমি কিনে গত ৮ বছর ধরে দোকানঘর নির্মাণ করে কাঠের ফার্নিচার ও টিনের ব্যবসা চালাচ্ছেন সোবহান মাদবর। তাদের অভিযোগ, ৫ আগস্টের পর উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সুরুজ মাদবর ও তার ছেলে স্বাধীন মাদবর তাদের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছেন। সোবহান মাদবর চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে গত মঙ্গলবার দিনগত রাতে দোকানের প্রায় ৫০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে দোকানটি দখল করে নেন সুরুজ মাদবর। দোকান ফেরত ও দোষীদের বিচারের দাবিও জানান তারা।

ভুক্তভোগী সোবহান মাদবর বলেন, ৫ আগস্টের পর সুরুজ মাদবর বিএনপির প্রভাব দেখিয়ে আমার কাছে চাঁদা দাবি করেছেন। আমি টাকা না দিলে মঙ্গলবার রাতে লোকজন নিয়ে এসে আমার প্রায় ৫০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। পরে তারা নিজেরাই দোকানে ব্যানার টানিয়ে দখল করে নেয়। বিএনপির নামে প্রভাব খাটিয়ে আমাকে এভাবে হয়রানি করা হচ্ছে। আমি সুষ্ঠু বিচার চাই।

ভুক্তভোগী মুন্না মাদবর বলেন, দোকানটি আমাদের কেনা সম্পত্তি। আমরা সেখানে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করছি এটা বাজারের সবাই জানে। এখন সুরুজ মাদবর আমাদের দোকানের তালা ভেঙে মালামাল নিয়ে গেছেন। তিনি দাবি করছেন, জমিটি নাকি তাদের। আমাদের হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। আমরা আমাদের জমি ও দোকান ফেরত চাই।

এদিকে দখলের অভিযোগ অস্বীকার করে উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সুরুজ মাদবর জানান, দোকানের জমিটি তাদেরই। তিনি দাবি করেন, প্রকৃত মালিকের কাছ থেকে তারা জমিটি কিনেছেন। আওয়ামী লীগ সরকার আমলে কিছু লোক তাদের জায়গা দখলে রেখেছিল। এখন নিজেদের সম্পত্তিতে তারা ব্যবসা করছেন এবং কারো মালামাল লুট করেননি। তার কথায়, আমাদের জমির কাগজপত্র আছে। কেউ যদি কাগজ দেখাতে পারে, আমি জমি ছেড়ে দেবো।

এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির সভাপতি বজলু শিকদার জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তিনি বিষয়টি দেখেছেন, তবে এ নিয়ে তাদের কাছে কেউ অভিযোগ করেনি। তিনি আরও জানান, শুনেছেন জমিটি সুরুজ মাদবরের, যদি তার বিরুদ্ধে দখলের অভিযোগ থাকে, সেটি তার ব্যক্তিগত ব্যাপার, দলের প্রভাবের কোনো বিষয় নেই।

নয়ন দাস/এআরবি