বসতভিটা দখল, ৩ শিশু ও স্ত্রীদের নিয়ে রাস্তায় ঘুরছেন দুই ভাই
মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার আউটশাহী গ্রামে দুই ভাইয়ের ঘর ভেঙে বসতভিটা দখল নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী দুই ভাই তাদের ৩ শিশু সন্তান ও স্ত্রীদের নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন। দিন-মজুর দুই ভাইয়ের অভিযোগ থানায় গিয়েও তারা কোনো প্রতিকার পাননি।
শনিবার (১৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
বিজ্ঞাপন
জানা গেছে, ওই গ্রামের আখলেছ সৈয়াল ও মোখলেছ সৈয়াল দুই ভাই তাদের পৈত্রিক জমিতে ঘর তুলে দীর্ঘদিন যাবৎ বসবাস করে আসছেন। বর্তমানে তাদের বাবা মারা যাওয়ার পরে পাশের চাষিরী গ্রামের আনোয়ার ভিস্তি নামের ব্যক্তি ওই জমি তার বলে দাবি করছেন। ভুক্তভোগীদের বাবা ও চাচা জীবিত থাকাবস্থায় আনোয়ার ভিস্তির কাছে বিক্রি করছে বলে একটি দলিল তাদের দেখায়। সেই দলিল নিয়ে আদালতে মামলা করায় ওই জমি জোর করে দখলে নেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগীরা জানান, ৪০ বছরের অধিক সময় ধরে তারা পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত বসতভিটায় বসবাস করে আসছেন। পার্শ্ববর্তী চাষিরী গ্রামের আনোয়ার তাদের বাবা ও চাচা আরশেদ আলী সৈয়ালের কাছ থেকে এই সম্পত্তি কিনেছি বলে দাবি করে। পরে একটি দলিলে দেখালে আমরা তার বিরুদ্ধে জাল দলিলের মামলা করি। মামলা করার পর সে আমাদের ঘরবাড়ি লুটপাট করে নিয়ে গেছে।
বিজ্ঞাপন
ভুক্তভোগী মোখলেছ সৈয়ালকে তার দুই শিশুকে নিয়ে টঙ্গিবাড়ী থানা এলাকায় ঘুরতে দেখা যায়। মোখলেছ তার ছেলে রমজানকে কোলে নিয়ে ঘুরছেন। মিনহাজও তার বাবার সঙ্গে হাঁটছে গন্তব্যহীন পথে। এদিকে আখলেছও শিশু আবিরকে সঙ্গে নিয়ে ঘুরছে রাস্তায় রাস্তায়।
মোখলেছ সৈয়াল বলেন, আনোয়ার সন্ত্রাসী নিয়ে এসে আমাদের ঘরের ভেতরে থাকা জিনিসপত্র সব লুটপাট করে নিয়ে গেছে। আমাদের ঘরে কিছু নেই। যে সমস্ত জিনিষ ছিল সব নিয়ে গেছে। রাতে ঘুমানোর মতো কাথা কম্বল কিছুই নেই। সব ওরা নিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে আখলেছ সৈয়াল বলেন, আমাদের ঘর ভেঙে নিয়ে যাওয়ার সময় আমরা থানায় এসেছিলাম থানা কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
আখলেছের ছেলে আবির বলেন, আমরা রাতে কোথায় থাকব? থাকার মতো আমাদের কোনো আশ্রয় নেই।
মোখলেছের স্ত্রী খাদিজা বলেন, সকালে ওরা সন্ত্রাসী নিয়ে ঘর ভাঙতে আসলে প্রথমে আমরা টঙ্গিবাড়ী থানায় আসি। পরে আমি ৯৯৯ এ ফোন দেই। ফোন দিলে বলে আগে আপনারা হাসপাতাল যান চিকিৎসা নিয়ে ডাক্তারি সর্টিফিকেট নেন পরে আমরা বিষয়টি দেখব।
অভিযুক্ত আনোয়ার ভিস্তি বলেন, ওই জমি আমার। বিষয়টি এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ প্রশাসনের লোকজন সবাই জানে। আপনি এভাবে লোকজন নিয়ে জমি দখল করতে পারেন কিনা জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি।
টঙ্গিবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুল হক ডাব্লিউ বলেন, এ ঘটনা আমাকে কেউ অবহিত করেনি বা অভিযোগও দেয়নি। অভিযোগ পেলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ব.ম শামীম/আরকে