শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নের পশ্চিম মাদারপুর গ্রামের শতবর্ষী ছামিরন বেগমের জীবন চলছে খুবই কষ্টে। বয়সের ভাঁজে নুয়ে পড়া এই নারী একসময় স্বামী-সন্তান নিয়ে সুখেই ছিলেন। স্বামী বচন আলী পানের ব্যবসা করতেন। ছিল জমিজমাও। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর পরই বদলে গেছে সবকিছু। দুই মেয়ের বিয়ের পর একা হয়ে পড়েন ছামিরন বেগম। একা থাকার কারণে নিজের বাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নেন বিধবা মেয়ের মেয়ের বাড়িতে। সেই থেকে মা-মেয়ের চলছে অভাবের সংসার। 

ছামিরনের কোনো ছেলে নেই। আছে মাত্র দুই মেয়ে। এর মধ্যে বড় মেয়ে বৈদিয়া খাতুনও (৭৫) অসুস্থ। তিনিও স্বামীহারা হয়েছেন দুই বছর আগে। তিনিই বর্তমানে মায়ের সব দায়িত্ব বহন করছেন। অভাব অনটনের মধ্যেও চেষ্টা করছেন মায়ের সেবা যত্ন করার।

তবে মা ছামিরন ও মেয়ে বৈদিয়া থাকার মতো কোনো জায়গা নেই। নেই ঘরও। নিয়মিত তিনবেলা খাবারও খেতে পারেন না তারা। নিজে হাটা চলাও করতে পারেন না। মেয়ের সহায়তায় কোনো মতে দিন কাটে তার।

ছামিরন ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমার কিছুই নাই। ঘর নাই, খাবার নাই, ওষুধ নাই। আমার জন্য এগুলোর ব্যবস্থা করে দেন। আমি বেশি কথা কইতে পারি না।

বড় মেয়ে বৈদিয়া খাতুন বলেন, আমার মা অনেক অসুস্থ। আমি অভাবি মানুষ। স্বামী মারা গেছে দুই বছর হলো। ছেলে মেয়েরা যতটুকু দেয়, সেটা দিয়ে মাকে চালাই। না পারলে অন্যের বাড়ি থেকে সাহায্য নিয়ে মাকে খাবার দেই। 

স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুল্লাহ ঢাকা পোস্টকে বলেন, ছামিরন খুব কষ্টে দিন পার করছেন। শেষ জীবনে তার জন্য একটা ঘর, খাবার আর চিকিৎসার ব্যবস্থা অত্যন্ত জরুরি। সরকার বা সমাজের কেউ এগিয়ে এলে তাদের পরিবারের জন্য আশীর্বাদ হতো।

বিষয়টি নজরে আসার পর ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. আশরাফুল আলম রাসেল ঢাকা পোস্টকে বলেন, আমি ফেসবুকে তার বিষয়ে পোস্ট দেখেছি। তার জন্য শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পাশাপাশি একটি খাট এবং ঘরের জন্য টিন দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

নাইমুর রহমান তালুকদার/এমএএস