পঞ্চগড়ে টানা ঘন কুয়াশা ও কনকনে শীতে জনজীবন চরমভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তেঁতুলিয়ায় তাপমাত্রা ক্রমেই নিম্নমুখী হওয়ায় সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ ও যানবাহন চালকরা।

বুধবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১১ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ সময় বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ এবং বাতাসের গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ১১ থেকে ১২ কিলোমিটার। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত সড়ক, মাঠ ও ঘাট ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন থাকায় দৃষ্টিসীমা কমে যায়। ফলে যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে।

এর আগের দিন মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৯৯ শতাংশ। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল মাত্র ১৬ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

টানা কুয়াশা ও কনকনে শীতের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। সকালে অনেকেই কাজে যেতে পারছেন না। শীত থেকে বাঁচতে বিভিন্ন এলাকায় মানুষকে খড়কুটো জ্বালিয়ে আগুন পোহাতে দেখা গেছে। সন্ধ্যা থেকে বৃষ্টির মতো ঝরছে শিশির, যা শীতের তীব্রতা আরও বাড়িয়ে তুলছে।

সদর উপজেলার জগদল এলাকার মিজানুর রহমান বলেন, সকালে কাজে বের হতে পারি না। এত ঠান্ডা যে হাত-পা অবশ হয়ে আসে। কাজ না করলে সংসার চলে না, আবার ঠান্ডায় কাজ করাও কষ্টকর।

ধাক্কামারা এলাকার অটো চালক আশরাফুল ইসলাম বলেন, সকালে কুয়াশার কারণে সামনে কিছুই দেখা যায় না। হেডলাইট জ্বালিয়েও অটো চালাতে ভয় লাগে। যাত্রীও খুব কম, আয় একেবারে কমে গেছে।

জালাসী এলাকার গৃহিণী রুবি বেগম বলেন, শিশু আর বয়স্কদের নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তায় আছি। সন্ধ্যার পর থেকেই এত ঠান্ডা পড়ে যে ঘরের ভেতরেও থাকা কঠিন হয়ে যায়।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি শীত মৌসুমে তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় গত ১১ ডিসেম্বর। সেদিন তাপমাত্রা নেমে আসে ৮ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসে, যা এ মৌসুমে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিসেবে বিবেচিত।

তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিতেন্দ্রনাথ রায় বলেন, ১১ থেকে ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত তেঁতুলিয়ায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বয়ে গেছে। মাঝখানে তাপমাত্রা কিছুটা বাড়লেও পরবর্তী দিনগুলোতে আবার কমছে। ডিসেম্বরের শেষ দিকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

নুর হাসান/আরকে