তারেক রহমানের সংবর্ধনায় সিলেট থেকে ২০০ বাসে ঢাকা যাবেন নেতাকর্মীরা
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সিলেট জেলা ও মহানগর এলাকা থেকে প্রায় ৩০ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় যাবেন।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সন্ধ্য়ায় বিষয়টি ঢাকা পোস্টকে নিশ্চিত করেছেন মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী।
বিজ্ঞাপন
বিএনপির দলীয় সূত্রে জানা যায়, জেলার নেতাকর্মীদের যাতায়াত নিশ্চিত করতে সিলেট জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে মোট ২০০টি বাস ভাড়া করা হয়েছে। বাসের পাশাপাশি মাইক্রোবাস, ব্যক্তিগত গাড়ি ও বিভিন্ন ধরনের পরিবহনে করেও নেতাকর্মীরা ঢাকায় যাবেন। ফলে অংশগ্রহণের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিলেট জেলার সবকটি উপজেলা থেকে বুধবার থেকেই নেতাকর্মীরা দলবদ্ধভাবে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হবেন। উপজেলা, পৌরসভা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে আগেই প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। যাত্রাপথে শৃঙ্খলা ও সমন্বয় রক্ষায় দায়িত্বশীল নেতারা কাজ করছেন।
বিজ্ঞাপন
এদিকে সিলেটের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নেতাকর্মী বর্তমানে ঢাকায় বসবাস করায় তারা সেখান থেকেই সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন বলে দলীয় একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। ফলে ঢাকায় সিলেট বিএনপির উপস্থিতি আরও দৃশ্যমান হবে বলে মনে করছেন নেতারা।
সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও সিলেট-৬ আসনে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন, তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আয়োজিত সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সিলেট জেলা থেকে প্রায় ২০০টি বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হবে। এর মধ্যে শুধু আমার নির্বাচনী এলাকা সিলেট-৬ থেকেই প্রায় ৪০টি বাসে করে নেতাকর্মীরা ঢাকায় যাবেন।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘদিনের আন্দোলন-সংগ্রামের পর আমাদের প্রিয় নেতা তারেক রহমানের দেশে ফেরা বিএনপির জন্য একটি ঐতিহাসিক মুহূর্ত। এই সংবর্ধনার মাধ্যমে দলের প্রতি তৃণমূল নেতাকর্মীদের ভালোবাসা ও আস্থার বহিঃপ্রকাশ ঘটবে। আমরা সবাইকে শান্তিপূর্ণ ও শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি।
বিএনপির একাধিক নেতাকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারেক রহমানের দেশে ফেরা ঘিরে সিলেটের তৃণমূল পর্যায়ে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা বিরাজ করছে। দলীয় নেতারা মনে করছেন, এই সংবর্ধনা অনুষ্ঠান বিএনপির সাংগঠনিক শক্তি, ঐক্য ও জনসমর্থনের প্রতিফলন ঘটাবে। সিলেট থেকে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মীর অংশগ্রহণ সেই বার্তাই সারাদেশে পৌঁছে দেবে।
এ বিষয়ে সিলেট মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী ঢাকা পোস্টকে বলেন,তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে আয়োজিত এই সংবর্ধনাকে ঘিরে সিলেট মহানগর বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা বিরাজ করছে। মহানগরের প্রতিটি থানা ও ৪২টি ওয়ার্ড পর্যায় থেকে বিপুলসংখ্যক নেতাকর্মী ঢাকায় যাবেন। কম হলেও মহানগর এলাকা থেকে ১০ হাজার নেতাকর্মী ঢাকায় যাবেন।
তিনি আরও বলেন,দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন-সংগ্রামে থাকা নেতাকর্মীদের জন্য এটি একটি আবেগঘন ও ঐতিহাসিক মুহূর্ত। আমরা সবাইকে শান্তিপূর্ণ ও শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে সংবর্ধনায় অংশ নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছি। এই অনুষ্ঠান বিএনপির ঐক্য ও সাংগঠনিক শক্তির বড় বহিঃপ্রকাশ হবে।
উল্লেখ্য, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগ নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠনের পর স্ত্রী ও সন্তানদের সঙ্গে দেশে ত্যাগ করেছিলেন। এরপর তাকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে তখনকার সরকারের আমলে তার ওপর বিভিন্ন মামলার দায়ে দণ্ডাদেশ আরোপ করা হয়, যার কারণে তিনি দীর্ঘদিন দেশে ফিরতে পারেননি।
২০২৪ সালের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পরিবর্তনের পর তার ওপর থাকা দণ্ডাদেশ থেকে মুক্তি প্রদান করা হয়। বর্তমানে তার মা বেগম খালেদা জিয়া মৃত্যুশয্যায় থাকায় রাজনৈতিক ও পারিবারিক দায়িত্ব পালন করতে আগামী ২৫ ডিসেম্বর তিনি দেশে ফেরার ঘোষণা দিয়েছেন। তার প্রত্যাবর্তন শুধু বিএনপির জন্য নয়, দেশের রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দেশে ফেরার সঙ্গে তার নেতৃত্বে দলের পুনর্গঠন এবং তৃণমূল পর্যায়ে উদ্দীপনা বৃদ্ধি পাবে।
মাসুদ আহমদ রনি/আরকে