বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে ফরিদপুর জিলা স্কুলের গৌরবময় ১৮৫ বছর পূর্তি উদযাপন ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা। তিনি বলেন, জিলা স্কুল যে স্বপ্ন দেখায়, সে স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে গেলে দেশ এগিয়ে যাবে।

আজ বৃহস্পতিবার (২৫ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জিলা স্কুল ক্যাম্পাসে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এর আগে একটি অ্যাসেম্বলি অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা অংশ নেন। অ্যাসেম্বলিতে পিটি প্রদর্শন করা হয়।

এর আগে বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ করা হয়। পরে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের সময় জাতীয় পতাকা, উৎসবের পতাকা ও জিলা স্কুলের পতাকা উত্তোলন করা হয়। যৌথভাবে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান মোল্লা ও পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম। যৌথভাবে উৎসবের পতাকা উত্তোলন করেন গৌরবময় ১৮৫ বছর পূর্তি ও পুনর্মিলনী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান এবং সদস্য সচিব ওয়াহিদ মিয়া। জিলা স্কুলের পতাকা উত্তোলন করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রীতিলতা সরকার।

এরপর শান্তির প্রতীক পায়রা অবমুক্ত করা হয় এবং ফেস্টুনসহ বেলুন উড়িয়ে দেওয়া হয়। এ আয়োজন সফল করতে সংশ্লিষ্টরা সার্বিকভাবে কাজ করে আসছেন।

জেলা প্রশাসক বলেন, আমাদের পারস্পরিক ভাববিনিময়ের মাধ্যমে নিজ নিজ ঐতিহ্য ও কৃষ্টি অনুসরণ করে চলতে হবে। জিলা স্কুল যে স্বপ্ন দেখায়, তা যেন যুগ যুগান্তর ধরে আমাদের পাথেয় হয়ে থাকে। এ স্বপ্ন যেন জাতি ধারণ ও লালন করে এ প্রত্যাশা তিনি ব্যক্ত করেন। তিনি আরও বলেন, জিলা স্কুল যে স্বপ্ন দেখায়, সে স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে গেলে দেশ এগিয়ে যাবে।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব ওয়াহিদ মিয়া। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম এবং ফরিদপুর জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রীতিলতা সরকার। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উৎসব কমিটির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান। উপস্থাপনা করেন যুগ্ম আহ্বায়ক মির্জা মো. আরিফুল ইসলাম।

এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে শুরু হয় বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা। শোভাযাত্রাটি জিলা স্কুলের সামনে মুজিব সড়ক থেকে শুরু হয়ে স্টেশনের মোড়, পৌরসভা ও জেনারেল হাসপাতাল, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সামনে দিয়ে জনতা ব্যাংকের মোড় হয়ে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার সামনে দিয়ে মহাকালীর মোড় হয়ে অম্বিকা সড়ক ধরে সারদা সুন্দরী মহিলা কলেজের সামনে দিয়ে শিল্পকলা একাডেমির সামনে দিয়ে সোনালী ব্যাংকের মোড়, চৌরঙ্গীর মোড় হয়ে ব্রহ্মসমাজ সড়ক দিয়ে মুজিব সড়ক অতিক্রম করে পুনরায় স্কুল ক্যাম্পাসে ফিরে আসে।

শোভাযাত্রায় উৎসবের ব্যানারের পাশাপাশি জাতীয় পতাকা ও উৎসবের বড় দুটি পতাকা বহন করা হয়। ব্যান্ডের তালে তালে তিনটি ঘোড়ার গাড়ি ও দুটি ট্রাক শোভাযাত্রায় অংশ নেয়, যেগুলো বয়স্ক শিক্ষার্থীরা ব্যবহার করেন। শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণকারীরা উৎসবের ছোট ছোট পতাকা নাড়াতে নাড়াতে এগিয়ে যান।

দুই দিনব্যাপী এ উৎসবের প্রথম দিন আজ বৃহস্পতিবারের অন্যান্য আয়োজনের মধ্যে রয়েছে স্মৃতিচারণ ও বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান, আতশবাজির উৎসব, স্কুলের ইতিহাস ও ঐতিহ্য নিয়ে তথ্যচিত্র প্রদর্শন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।

জহির হোসেন/এআরবি